বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শুধু আলোচনায় সীমাবদ্ধ না রেখে কাজে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ শুধু আলোচনায় সীমাবদ্ধ না রেখে কাজে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে হলে তাঁর আদর্শকে লালন করতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে শুধু আলোচনায় সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দুদকের আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে কমিশনের চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ উপলক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশনে এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে কমিশনের সহকারী পরিচালক হতে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের প্রায় তিন শতাধিক কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।

দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট নিহত তাঁর পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

দুদক চেয়ারম্যান মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বংবন্ধুর অসামান্য অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, বাঙালি জাতির প্রতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছিল অকৃত্তিম ভালোবাসা ও বিশ্বাস। মানুষের প্রতি ছিল তাঁর অনেক দরদ। তাই, বিশ্বদরবারে বঙ্গবন্ধু নিজেকে সর্বদা শোষিত শ্রেণির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করতেন। তিনি ছিলেন হিমালয়তূল্য বিশাল ব্যক্তিত্বের অধিকারী; তাঁর অসামান্য মর্যাদা ও দৃঢ়তার কথা আন্তার্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও তুলে ধরেছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অনমনীয় ও সুদৃঢ় অবস্থানকে সবাই স্বীকৃতি দিয়েছেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে শুধু মুখে ধারণ না করে তাঁর আদর্শকে অনুকরণ করে আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে দেশ গঠনে সকলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দুদক চেয়ারম্যান বঙ্গবন্ধুর দর্শনের বিপরীতে কাজ না করার জন্য সকলকে আহ্বান জানান।

দুদক কমিশনার মো. জহুরুল হক তার বক্তব্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার স্মৃতিচারণ করেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কোন রাষ্ট্র প্রধানকে হত্যার পর খুনিদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়নি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রে এটি হয়েছে। যদিও দেরিতে হলেও আমাদের সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে। এদেশে এ জঘন্য হত্যার বিচার হয়েছে এবং অপরাধীদের সাজা কার্যকর হয়েছে। তাঁর কন্যা পিতার খুনের বিচার নিশ্চিত করেছেন।

দুদক কমিশনার আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭৫ সালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে কথা বলেছেন আমরা আজও একই কথা বলছি। তার উক্তি সমূহ আমরা সবাই জানি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর কথামত কাজ করি না, শুধু মুখে বলি। বঙ্গবন্ধুর আত্মা তখনই শান্তি পাবে যখন আমরা তাঁর কথামত কাজ করব; দুর্নীতি দমনে দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করব।

বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় এর বক্তাগণ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আর্থ সামাজিক প্রভাব, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট নিহত সব শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের জীবিত সদস্যদের দীর্ঘায়ু কামনা করে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে দেশের অব্যাহত উন্নয়ন অগ্রযাত্রা কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/এএ/ইসে