বিমানে স্মার্টফোনে ফ্লাইট মোড চালু না করলেই বিপদ!

শখের বসে কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে ভ্রমণ আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত। তেমনি ভ্রমণের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে আকাশপথ এককালে বিমানে শুধু ধনীরা যাত্রা করলেও বর্তমানে প্রয়োজনে নিম্নমধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত সমাজের মানুষও এখন যাতায়াত করছে বিমানপথে।
বিমান ভ্রমণে নিরাপত্তার খাতিরে রয়েছে বেশ কিছু বিধি নিষেধ। তার মধ্যে অন্যতম হলো বিমানে উঠেই নির্দিষ্ট আসনে বসে, সিটবেল্ট শক্ত করে বেঁধে নিয়ে ফোনের ‘ফ্লাইট মোড’ বা ‘এয়ারপ্লেন মোড’ চালু করে দেওয়া। প্রায়শই যারা বিমান সফর করেন, তারা বিষয়টিতে অভ্যস্ত। তবে নতুনদেরও ভুল হওয়ার উপায় নেই।
বিমানসেবিকারা ফোনে ‘ফ্লাইট মোড’ চালু করার কথা ঘোষণা করেন। ‘ফ্লাই়়ট মোড’ চালু হওয়ার পর কাউকে ফোন কিংবা মেসেজ করার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এমনকি ইন্টারনেটও কাজ করে না। বিমানে উঠে নিয়মমাফিক এ সব তো করেন, কিন্তু কী জন্য করেন, তা অনেকেই জানেন না।
চলুন জানা যাক ‘ফ্লাইট মোড’ চালু না করলে কোন ধরনের বিপদ ঘটতে পারে।
বিমান সফরের সময়ে মোবাইল চালু করে রাখলে বিমানের নেভিগেশন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হতে পারে। মোবাইলে ‘ফ্লাইট মোড’ চালু না থাকলে বিমানচালকের সমস্যা হতে পারে।
প্লেন চালানোর সময়ে পাইলট সর্বদা কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল চালু থাকলে পাইলটদের কিছু অসুবিধা হয়। মোবাইল ফোনের সঙ্কেত বিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করতে পারে। যে কারণে বিমান ভুল পথে যাওয়ার বা কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো যাত্রী যদি বিমানে উঠে ফোনের ফ্লাইট মোড চালু না করে বা ফোন বন্ধ না করেন; তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। তবে যতক্ষণ না ফোন এয়ারপ্লেন মোডে রাখা হবে ততক্ষণ প্লেন উড়বে না তা কিন্তু নয়।
ফ্লাইটের সময় মোবাইল সংযোগ চালু রাখলে মোবাইল সিগন্যাল বিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে। বিমানে মোবাইল সচল থাকলে তার থেকে নির্গত তরঙ্গ অন্যান্য স্থানের সঙ্গে সংযোগ করতে শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে বিমানের রেডিও স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই বিমানে উঠেই ‘ফ্লাইট মোড’ চালু করে দেওয়া জরুরি।
ফ্লাইট মোডে রাখার কিছু সুবিধাও রয়েছে। সাধারণত ফোন চালু থাকলে টুং-টাং করে সারাক্ষণই নানা নোটিফিকেশন ঢুকতে থাকে। কিন্তু ‘ফ্লাইট মো়ডে’ রাখলে কল, মেসেজ, বিজ্ঞপ্তি ইত্যাদির হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায়। আর তাই সেসময় আপনি কোনো বাধা ছাড়াই সিনেমা দেখা, গেম খেলা কিংবা গান শোনা উপভোগ করতে পারবেন।
ফ্লাইট মোডে রাখার আরেকটি সুবিধা হলো চার্জ হতে বেশি সময় না নেওয়া। বিমানে যাতায়াতের সময় ফোনটি সচল রাখা জরুরি, আবার বেশি ব্যবহার করলে চার্জও চলে যায়। গন্তব্যস্থলে পৌঁছে চার্জ করার সুযোগ কখন আসবে সেটাও নিশ্চিত না। ফলে বাড়তি চার্জ যেন ক্ষয় না হয়; সেজন্য ফ্লাইট মোডে রাখা সহজ সমাধান। এতে চার্জ নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেকটাই দূর হবে।
এছাড়া যে মুহূর্তে আপনি আপনার ফোনকে ফ্লাইট মোডে রাখবেন, আপনার ফোনের সব অ্যাপের আপডেট বা ডাউনলোড বন্ধ হয়ে যাবে, যা আপনার ফোন চার্জিংয়ের স্পিড বাড়িয়ে দেবে। এই সময় ইএমএফ রেডিয়েশনের এক্সপোজারও হ্রাস পেতে শুরু করে।
(ঢাকাটাইমস/১১ মে/আরজেড/এসআইএস)

মন্তব্য করুন