ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চেম্বার ভবন গুঁড়িয়ে দিয়ে অর্পিত সম্পত্তি উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০২৫, ১৯:২০
অ- অ+

উচ্চ আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ভবনসহ দুটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এর মাধ্যমে বেদখল হয়ে থাকা হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৫ শতক অর্পিত সম্পত্তি উদ্ধার করে প্রত্যর্পণ করা হয়।

আজ বুধবার ( জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের মসজিদ রোড এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাবীন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।

মামলার রায় জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শহরের মসজিদ রোড এলাকায় জেলা প্রশাসন অর্পিত সম্পত্তির ২৪ দশমিক ৮৯ শতক জায়গা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিসহ বিভিন্ন জনের কাছে বন্দোবস্ত দেয়।

২০১২ সালের জুলাই মাসে লীলাময় ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তি জায়গাটির মালিকানা দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আদালতে মামলা করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জেলা চেম্বার অব কমার্স।

২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ আদালত লীলাময় ভট্টাচার্যের পক্ষে রায় দেন। সরকারপক্ষ এই অর্পিত আপিল রায় ডিক্রির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতে রিভিউ করে। পরে মামলার বাদি রিভিউর বিরুদ্ধে একটি আবেদন করেন। উচ্চ আদালতের আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালের অর্পিত আপিল মোকদ্দমার রায় ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য এক আদেশ দেন।

জেলা প্রশাসন মামলায় হেরে যায়। উচ্চ আদালত জায়গাটি প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিতে নির্দেশনা দেন।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের (আইন অধিশাখা-) ২০১৮ সালের এপ্রিলের পরিপত্র দ্বারা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন ২০০১ এর ২২ () ধারা বিধান বিদ্যমান থাকায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্মারকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল আপিল ট্রাইবুনালের রায় বাস্তবায়নের নির্দেশনা রয়েছে। আপিল ট্রাইবুনালের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে প্রতিকার চাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই উচ্চ আদালত রিট দায়েরের জন্য কোনো প্রস্তাব প্রেরণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে।

২০১৬ সালের অর্পিত আপিল রায়ের কার্যকারিতার ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ নেই। অর্পিত আপিল ট্রাইব্যুনাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের দেয়া ডিক্রি বাস্তবায়নের আদেশ বিদ্যমান থাকায় মামলার রায়-ডিক্রি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে আইনত আর কোনো বাধা নেই বলে মত দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি

উচ্চ আদালতের নির্দেশে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মসজিদ রোড এলাকায় যান। সময় চেম্বার অব কমার্সের ভবনে থাকা দোকানদারকে মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। ব্যবসায়ীরা মালামাল সরিয়ে নিলে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।

তবে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, তাদের উচ্ছেদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। চেম্বারও কিছু বলেনি।

জায়গার মালিক নির্মল ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটি আমাদের পূর্বপুরুষের জায়গা। বিভিন্ন কারণে এটি অর্পিত সম্পত্তিতে রূপান্তরিত হয়। সরকারের অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পনের আইন করার পর আমরা ২০১২ সালে মামলা করি এবং ২০১৮ সালে মামলার রায় হয়। ২০১৯ সালে উচ্ছেদের নোটিশ আসে। উচ্চ আদালতে দু-একটি রিট হওয়ার পর রায় আমাদের পক্ষে আসে। জেলা প্রশাসন প্রত্যেক লিজিকে সরে যেতে নোটিশ দেন।

ব্যাপারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন বলেন, আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে চেম্বারসহ দুটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
২০ জুলাই থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান: বিআরটিএ
বান্দরবানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিন নারীর মৃত্যু
পল্লবীতে চাঁদার দাবিতে হামলা ও গুলি: র‌্যাবের অভিযানে আরও ৫ আসামি গ্রেপ্তার
বাড্ডায় চাঞ্চল্যকর আনোয়ার হত্যা: গ্রেপ্তার নূরার রিমান্ডে দেওয়া তথ্যে মিলল বিদেশি পিস্তল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা