ফেনী পরিস্থিতির অবনতি, গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত, অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ বন্ধ

টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তত ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ১৪টি স্থান ভেঙে গেছে। এতে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলে জানান পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান।
ফুলগাজী উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছেন বলে জানান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম। তিনি বলেন, শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে ফেনী শহরে এবং পরশুরাম ও ফুলগাজীর অনেক বাসা, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার এবং সাবস্টেশন পানিতে তলিয়ে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।
পাউবোর তথ্যমতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১.৩৭ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত রাত ১০টায় সর্বশেষ ১৩.৯২ মিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়।
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুটি, অলকায় তিনটি, শালধর এলাকায় একটি, ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগর এলাকায় একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুটি স্থানে ভেঙেছে। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে আরও কয়েকটি জায়গায় ভাঙনের সংবাদ পাওয়া গেছে।
কহুয়া নদীর পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়ায় দুটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি ও ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি স্থানে ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে ফেনী শহরে এবং পরশুরাম ও ফুলগাজীর অনেক বাসা, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক মিটার এবং সাবস্টেশন পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানায় বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ও ফেনীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
তবে এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে কেউ আসেনি বলে জানান পরশুরামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান। তিনি বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, তারা উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছেন। শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) উপজেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।
(ঢাকাটাইমস/৯জুলাই/মোআ)

মন্তব্য করুন