ডাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিযোগিতা চলছে: আব্দুল কাদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রচারে আচরণবিধি লঙ্ঘন এখন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আব্দুল কাদের।
বুধবার মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি ঘোষণা করেছে ঠিকই, কিন্তু বাস্তবে কেউ তা মানছে না। কমিশন সব দেখছে, তারপরও একদলকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে সব প্যানেল প্রতিযোগিতার মতো আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে, অথচ প্রশাসন নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একটা গোষ্ঠী ৯০-এর ডাকসু নির্বাচনের পর গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি চালু করেছিল। এবার ২০২৫ সালের ডাকসুর পর আবারও সেই দিনগুলো ফিরে আসবে কিনা, শিক্ষার্থীরা তা নিয়ে শঙ্কিত।’
আব্দুল কাদের জানান, ৫ আগস্টের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্বস্তি ও ভয় দেখা দিয়েছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘একটা ছেলে-মেয়ে পাশাপাশি বসলে তাদের মোরাল পুলিশিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে। চারুকলায় প্রচারণায় গেলে আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি, আর সেখানকার শিক্ষার্থীরা নিজেদের শঙ্কার কথা আমাদের জানিয়েছে।’
ক্যাম্পাসে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি নির্বাচন কমিশন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে সেনাবাহিনীর দরকার নেই। এটা হবে মশা মারতে কামান ব্যবহার করার মতো।’— মন্তব্য করেন আব্দুল কাদের।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আবু বাকের মজুমদারও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষদিনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আচরণবিধি ভেঙেছে। তবুও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন ক্যাম্পাসে ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় তিনটার মধ্যে সব সরানোর নির্দেশ দিলেও অনেকেই সরায়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তানভীর বারী হামিম মনোনয়ন সংগ্রহ করার সময় নিয়ম ভঙ্গ করে মুহুর্মুহু স্লোগান ও প্রচুর সংখ্যক কর্মী সমর্থক নিয়ে যাওয়া এবং পরবর্তীতে এগুলো সোস্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার মাধ্যমে আচরণবিধি লংঘন করেছে।’
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এ নির্বাচন কমিশন আসলেই কি সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে? কারণ যারা নিয়ম ভাঙছে, তাদের বিরুদ্ধে তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
এর আগে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, ডাকসু নির্বাচনের আগের দিন (৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর) নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন স্তরের ব্যবস্থা থাকবে। প্রথম স্তরে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম, দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ বাহিনী, আর তৃতীয় স্তরে সাতটি প্রবেশমুখে ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে অবস্থান করবে সেনাবাহিনী।

মন্তব্য করুন