তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও তামাকজনিত মৃত্যু কমাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। একই সঙ্গে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’র আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন তারা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন আয়োজিত ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি বাস্তবায়ন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস’ শীর্ষক গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানানো হয়।
সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. শহিদুল আলম ও মো. আবু মাসুদ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক ন্যাশনাল প্রফেশনাল ডা. সৈয়দ মাহাফুজুল হক। তিনি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়া সংশোধনী থেকে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরেন।
যার মধ্যে রয়েছে— অধূমপায়ীদের সুরক্ষায় সব ধরনের পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম (CSR) নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া, তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা এবং স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।
ডা. সৈয়দ মাহাফুজুল হক বলেন, এসব বাস্তবায়ন হলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়ক হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, দেশে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তারা মিথ্যা প্রচার, লবিং ও প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে আইন দুর্বল করার চেষ্টা চালায়। এ কারণে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠক না করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে খসড়া প্রণয়ন করেছে, সেটি পাস হলে আইনটি এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও শক্তিশালী হবে বলেও জানান বক্তারা। এসময় সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে সরকারকে দ্রুত আইন পাসে তাগিদ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা আরও বলেন, খসড়া সংশোধনীটি পাস হতে যত দেরি হবে, তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি ততই বাড়বে। পাশাপাশি তামাক কোম্পানি ও তাদের স্বার্থসংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মিথ্যা অপপ্রচারে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সহসভাপতি ডা. মোহাম্মদ খলিলউল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্থাটির স্বাস্থ্য ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।

মন্তব্য করুন