টিউবলাইট দিয়ে আঘাত করছিলেন জালাল, হতে পারে প্রার্থিতা বাতিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভিপি প্রার্থী জালাল আহমেদ তার রুমমেট রবিউল ইসলামকে ছুরি দিয়ে নয়, বরং টিউবলাইট ছুড়ে মেরে আহত করেছেন।
বুধবার তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় করা হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারে এমনটাই জানা গেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জালাল আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-২০১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। জালাল আহমদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ রবিউল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ৪৬২ নং রুমে থেকে লেখাপড়া করে আসছে। জালাল সিনিয়র শিক্ষার্থী হওয়ায় বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে শিক্ষার্থী মোঃ রবিউল হককে হলের রুমের ভেতর নানাভাবে হয়রানি করতো এবং লেখাপড়া ও ঘুমের বিঘ্ন সৃষ্টি করতো। রবিউল হক প্রতিবাদ করলে জালাল আহমদ তাকে মারপিট করতো এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করতো। বিষয়টি শিক্ষার্থী রবিউল হক আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা জালাল আহমদকে শাসন করেছি এবং তাকে হল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি। ২৬ আগস্ট রাতে রবিউল হক ৪৬২ নং রুমের ভেতর ঘুমিয়ে পড়ে। সাড়ে ১২টার দিকে জালাল রুমের ভিতরে প্রবেশ করে বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালায় এবং চেয়ার টানা হেঁচড়া করে বিকট শব্দ করতে শুরু করে। যার ফলে রবিউল হকের ঘুম ভেঙে যায়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, রবিউল জালালকে বলেন, ভাই সকালে আমি লাইব্রেরিতে যাবো আপনি একটু আস্তে শব্দ করেন। এতে আসামি জালাল আহমদ ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থী রবিউল হকের সাথে তর্কবিতর্ক শুরু করে। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে জালাল আহমদ রবিউল হককে কাঠের চেয়ার দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে বারি মারে। রবিউল হক তার হাত দিয়ে কাঠের চেয়ারের বারি প্রতিহত করলেও কাঠের চেয়ারের আঘাত রবিউল হকের কপালে ফুলা জখমপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে জালাল আহমদ পুরাতন টিউব লাইট দিয়ে রবিউল হককে পুনরায় মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে। রবিউল হক মাথা সরিয়ে নিলে উক্ত টিউবলাইটের আঘাত তার বুকের বাম পাশে লেগে টিউবলাইট ভেঙ্গে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরবর্তীতে আসামি জালাল আহমদ পুনরায় ভাঙ্গা ও ধারালো টিউবলাইট দিয়ে রবিউল হককে আঘাত করলে রবিউল হক তার বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করলে বাম হাতে কাটা রক্তাক্ত জখম হয়।
প্রসঙ্গত, রুমমেটকে রক্তাক্ত করার পর নিজেকে রুমে আবদ্ধ করে রাখেন ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী জালাল আহমদ। এসময় হলের অন্য শিক্ষার্থীরা তার রুমের সামনে এসে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এরপর দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর রাত আড়াইটার দিকে জালালকে রুম থেকে বের করে পুলিশে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে জালালের বিরুদ্ধে এখনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনী টাস্কফোর্স এটি নিয়ে কাজ করছে। খুব শিগগিরই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে। তবে তার অপরাধের ধরন অনুযায়ী তার প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন