বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, জেলা সভাপতিসহ আহত ১০

বগুড়া প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৩৪
অ- অ+

বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি সজিব সাহাসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ নেতাকর্মী।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে জেলা ছাত্রলীগ ও পদবঞ্চিত বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে।

সংঘর্ষে আহতরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব সাহা, আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সিহাব, লিটন, সৈকত, শুভসহ আরও তিন থেকে চার কর্মী । এ ছাড়া বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা মাহফুজার রহমানও আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার আয়োজনে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ছিল। এ জন্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে একটি দল এতে অংশ নেয়। পরে ছাত্রলীগের স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে সমাবেশে বক্তব্য শুরু করেন সভাপতি সজিব সাহা।

এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সমাবেশের খবর পেয়ে তৌহিদ, মাহফুজারের নেতৃত্বে একটি দল লাঠিসোঁটা, লোহার রড নিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে বক্তব্য শুরু হলে সমাবেশে এসে তারা হামলা করে। হামলায় এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন তারা। পরে বিদ্রোহী গ্রুপের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া হয় জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। কলেজের উত্তর পাশের ক্যান্টিন এলাকায় সংঘর্ষ ঘটে। এদিন সকাল থেকেই কলেজে পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিল। তবে তারা ঘটনাস্থলের পাশে নীরবে অবস্থান করছিলেন। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এসে ছাত্রলীগের দুপক্ষকে সরিয়ে দেন।

এদিকে, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের এমন সংঘর্ষের কারণে কলেজে উত্তেজনা ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনার্স প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব সাহা বলেন, সারাদেশে অবরোধ, নৈরাজ্যে শিক্ষাজীবন বিঘ্নের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে কলেজে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেয় জেলা ছাত্রলীগ। আজিজুল হক কলেজে মিছিল শেষে আমরা সমাবেশ শুরু করি। এ সময় তৌহিদ, মাহফুজারের নেতৃত্বে পাঁচ-ছয় জনের একটি দল এসে অতর্কিতে হামলা করে। তখন আমি এগিয়ে এলে আমার হাতেও আঘাত লাগে। পরে আমাদের ছেলেরা একত্র হয়ে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। সজিব সাহা জানান, প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় তার কব্জি ফুলে গেছে। এ জন্য চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন তিনি।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মাহফুজার রহমান বলেন, আমি নিজেও আহত হয়েছি। এখন কথা বলতে পারছি না।

বগুড়া সদর থানাধীন স্টেডিয়াম ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মমিনুল ইসলাম বলেন, কলেজে বিশৃঙ্খলার সংবাদ পেয়ে আমরা আসি। এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এখন কলেজের পরিবেশ শান্ত আছে। তবে সংঘর্ষের বিষয়ে এই কর্মকর্তা কিছু বলতে পারেননি।মমিনুল ইসলাম বলেন, আসলে কী হয়েছে তা এখন বলতে পারছি না। আমরা তদন্ত করবো। তদন্ত করে তারপর বলতে পারবো। এ ঘটনায় কেউ আটক নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সরকারি আজিজুল হক কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. মো. সবুর উদ্দিন বলেন, কলেজ শিক্ষকদের নিয়ে আমরা মিটিংয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে হৈচৈ শুনে আমরা বের হই। বের হয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ দেখি। আমি তাদের চিনি না। তারা কোনো সংগঠন করেন তাও জানি না। এরকম অবস্থা দেখে আমরা পুলিশের উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তারা এসেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ নভেম্বর সজীব সাহাকে সভাপতি ও আল-মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটি ঘোষণার পরপরই তৌহিদুর রহমান, মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে জেলা ছাত্রলীগের একাংশ বিক্ষোভ শুরু করে। তখন জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছিলেন সংগঠনটির একাংশ। এরপর থেকে জেলায় ছাত্রলীগের দুপক্ষ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিগত সময়ে একাধিকবার দুপক্ষের সংঘর্ষ ঘটেছে।

(ঢাকাটাইমস/০৯নভেম্বর/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সাবেক সিইসিকে জুতাপেটা-লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আটক
মোহাম্মদপুরে ‘পাটালি গ্রুপে’র সদস্য ইয়াসিন গ্রেপ্তার
আবারও বাড়ল গুম কমিশনের মেয়াদ
কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা!
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা