পেনাল্টি মিস করে রোনালদোর কান্না, কাঁদলেন মা-ও

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুটে রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ উপভোগ করল দর্শকরা। সেখানে ইউরোর শেষ ষোলোর ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল পর্তুগাল ও স্লোভেনিয়া।অপেক্ষাকৃত দুর্বল স্লোভেনিয়া নির্ধারিত সময়ে কোনো গোল করতে দিলো না পর্তুগালকে। অবশেষে পর্তুগিজদের সামনে সুযোগ এলো। অতিরিক্ত সময়ের ১০৫ মিনিটে পেনাল্টি পেলো তারা।
স্বাভাবিকভাবেই দলের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নেবেন পেনাল্টি। পুরো পর্তুগিজ শিবির তখন গোল উদযাপনের অপেক্ষায়। এমন এক মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হলেন রোনালদো। সর্বশেষ ১৩ পেনাল্টিতেই গোল করা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আজ স্লোভেনিয়া গোলকিপার ইয়ান ওবলাককে ফাঁকি দিতে পারেননি। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পেনাল্টি মিস করে নিজেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না রোনালদো।
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে এসে এমন সুযোগ মিস! রোনালদো যেন নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। রীতিমত কান্নায় ভেঙে পড়েন পাঁচবারের ব্যালন ডি‘অরজয়ী তারকা। শিশুর মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকা রোনালদোকে এসে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন তার সতীর্থরা। অতিরিক্ত সময়ের খেলার মাঝ বিরতিতে দলীয় স্টাফরাও রোনালদোকে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন।
তবু কান্না যেন থামছিলই না। ছেলের এমন কান্না দেখে আবেগী হয়ে পড়েন রোনালদোর মা-ও। এ সময় গ্যালারিতে বসে কাঁদতে দেখা যায় তাকে।
রোনালদো আর তার মায়ের এমন কান্নাভেজা চেহারা অবশ্য ম্যাচ শেষে হাসিতে রাঙিয়েছে। টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়াকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে পর্তুগাল। টাইব্রেকারে প্রথম শটটিই নেন রোনালদো, করেন গোলও। বল জালে জড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের কাছে দুই হাত জোড় করে ক্ষমাও চান তিনি।
ম্যাচ শেষে রোনালদোর পাশে দাঁড়ালেন কোচও। পেনাল্টি কাজে লাগাতে না পারলেও টাইব্রেকারে প্রথম শট তাকে দিয়েই নেওয়াতে কোনো সংশয় ছিল না রবের্তো মার্তিনেসের মনে।
তিনি বলেন, 'সে আমাদের জন্য উদাহরণ। এই আবেগের প্রকাশগুলোও অসাধারণ। তার এসব (চারপাশের আলোচনা) পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই এবং সে যেমন আছে, সেজন্যই তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই, যেভাবে দলের পাশে থাকে সে…। আমি সবসময়ই নিশ্চিত ছিলাম, টাইব্রেকারে প্রথম শটটি তাকেই নিতে হবে এবং আমাদেরকে জয়ের পথ দেখাতে হবে…।'
'আমার মনে হয়, আমাদের অধিনায়ককে নিয়ে আমরা সবাই গর্বিত। সে যা করছে, গোটা ড্রেসিং রুমই তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত। আমার মতে, আমাদের সবাইকে দারুণ এক শিক্ষাও সে দিয়েছে যে, প্রতিটি দিনকেই প্রাণবন্ত করে তুলতে হবে জীবনের শেষ দিনের মতো।'-যোগ করেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/০২ জুলাই/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন