জীবন ঝুঁকিতে গোমতীর দুই পাড়ের মানুষ, আশ্রয় নিচ্ছে বেড়িবাঁধে

জাহিদ হাসান নাইম, কুমিল্লা প্রতিনিধি
  প্রকাশিত : ২২ আগস্ট ২০২৪, ১৫:৫৬| আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৪, ১৬:০০
অ- অ+

প্রবল বর্ষণ ভারতীয় ঢলে বিপৎসীমার ৯২ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতী নদীর পানি। প্লাবিত হয়েছে পুরো এলাকা। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন গোমতীর দুই পাড়ের মানুষ। চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে তাদের জীবনে। আসবাবপত্র গৃহপালিত পোষাপ্রাণী নিয়ে বেড়িবাঁধে উঠে এসেছে চরাঞ্চলের মানুষ।

এদিকে, ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় প্রবল বর্ষণে কুমিল্লার গোমতীর নদীর পাশাপাশি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কাঁকড়ি নদীর পানিও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খাল দিয়ে পানি ঢুকে পড়েছে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা শহরে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশ পানিতে ডুবে যাওয়ায় যাত্রীদেরও ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।

পরিস্থিতি বন্যাকবলিত চরাঞ্চলের মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, ছাত্র সমন্বয়কারী বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোও কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন গোমতীর কোলঘেঁষা কামারখাঁড়া, দূর্গাপুর, জগন্নাথপুর, ঝালুয়াপাড়া, দেবপুর, কংশনগর, পালপাড়া, কাইতরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কামারখাঁড়া এলাকায় গোমতী নদীর সাথে সংযুক্ত সেচ পাইপ দিয়ে পানির স্রোত ঢুকে পড়ছে বেড়িবাঁধের অপরপাশে লোকালয়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাচ্ছে স্থানীয়রা।

সদরের জগন্নাথপুর ঝালুয়াপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধের ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটলে বালুর বস্তা বাঁশ দিয়ে পানির স্রোত আটকানোর চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া গোমতির উত্তরপাড়ের বিভিন্ন লোকালয়েও পানি ঢুকে পড়ায় স্থানীয়দের ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে।

পানি বেড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষি কাজ করা নদীর চরাঞ্চলের কৃষকেরা। চর ডুবে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের।

পানিতে তলিয়ে গেছে তাদের চাষাবাদ করা নানান শাক সবজি অন্যান্য ফসল। টানা দুই দিন পানির নিচে থাকায় ফসল আর রক্ষা করা যাবে না বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বলছেন, আমাদের আর বাঁচার মতো কিছুই রইলো না। ঘর গেলো, ক্ষেত খামারও চলে গেলো। চাষ করা জমিগুলো পানির নিচে। কী নিয়ে বাঁচবো আমরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টি আরও দুইদিন থাকতে পারে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান বলেন, সকাল ১০টায় পানি বিপৎসীমার ৭১ সে.মি.উপরে থাকলেও দুপুর ১২টায় তা পৌঁছেছে ৯২ সেন্টিমিটারে। আমরা বাঁধগুলো রক্ষায় সর্বোচ্চ কাজ করছি। প্রতিটি পয়েন্টেই আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সবগুলো পয়েন্টে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এছাড়া ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি আমরা। আমরা বাঁধে কোনো ফাটল সৃষ্টির খবর পেলেই সেখানে দ্রুত টিম পাঠাচ্ছি। আমাদেরকে স্থানীয় লোকজনও সহযোগিতা করছেন।

(ঢাকাটাইমস/২২আগস্ট/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সফররত চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনেক আত্মবিশ্বাসী: চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী
টাইগারদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর, হোয়াইট ওয়াশ এড়াতে বোলিংয়ে তাকিয়ে
এবার নিরবের নায়িকা ইধিকা পাল, প্রকাশ্যে প্রথম কাজ
পাকিস্তানকে ১৯৭ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা