মাদারীপুরে আগুনে পুড়ল আড়াই কোটি টাকার পাইপ

রাতের আঁধারে রহস্যজনকভাবে আগুন জ্বালিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হলো প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ড্রেজারের পাইপ। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার মাদবরেরচর হাট সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীর উত্তর পাশে পতিত জমিতে স্তূপ করে রাখা ড্রেজিংয়ের কাজে ব্যবহৃত পাইপে।
এ ঘটনায় রবিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শিবচর থানা পুলিশ ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এর আগে শনিবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে আগুন দেওয়া হয় পাইপে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বেশ কয়েক মাস যাবত ক্যাসল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে পদ্মা নদীতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলেছে। পরে ড্রেজিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক পাইপ পদ্মার শাখা নদীর পাড়ে স্তূপ করে রেখে দেয় কোম্পানির লোকজন। হঠাৎ শনিবার রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ওখানে থাকা ১৭৫টি এইচডিপি এবং ৫২টি রাবার পাইপে আগুন ধরিয়ে দেয়। কিন্তু সেখানে কোনো লোকজন না থাকায় রাতভর আগুনে পাইপগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে রবিবার সকালে কোম্পানির লোকজন ঘটনাস্থলে আসে। পুড়ে যাওয়া পাইপের আনুমানিক মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বিষয়টি জানা নেই কর্তৃপক্ষের।
এ ঘটনায় রবিবার বিকালে শিবচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দোষীদের বিষয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন।
কোম্পানির দায়িতপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মুন্না শিকদার বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বেশ কিছু পাইপ নদীর তীরেই একটা পতিত জমিতে স্তূপ আকারে রেখে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জানতে পারি ওই জমির মালিক স্থানীয় কাইয়ুম মুন্সি নামে এক ব্যক্তি। মাস তিনেক আগে তার সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বাৎসরিক ২৫ হাজার টাকা প্রদানের একটা মৌখিক চুক্তিও হয়। কিন্তু জমির মালিক দাবি করা কাইয়ুম মুন্সিকে জমির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসার কথা বলা হলেও এখনো তিনি আসেনি। গত কয়েকদিন আগে একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে আমার নিকট ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তাকে টাকা দেওয়া হয়নি।’
মুন্না শিকদার আরও বলেন, ‘ঢাকায় থাকার কারণে রবিবার সকালে এসে শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করি। পরে ওসি সাহেবের নেতৃত্বে একটি দল আমার সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে মামলা রুজু করেন। এই ঘটনার প্রকৃত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
এ ব্যাপারে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন, ‘অভিযোগটি পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। কেউ একজন তাদের নিকট চাঁদা দাবি করেছে বলে জানতে পারি। তবে ঘটনাটি পরিকল্পিত এটা বোঝা যায়। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগটির আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
(ঢাকা টাইমস/১৩জানুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন