পশ্চিমবঙ্গের বহুল আলোচিত আরজি কর মামলার রায় আজ

পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইন্টার্নি চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথ হত্যা মামলার রায় আজ। গত ৯ আগস্ট হাসপাতালটির ইমারজেন্সি ভবনের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় তার বিভৎস মৃতদেহ। হত্যার আগে দলবেঁধে ধর্ষণও করা হয়েছিল তরুণী চিকিৎসককে।
আজ সেই মামলায় রায়দেবে পশ্চিমবঙ্গের শিয়ায়লদা আদালত। এর আগে গত ৪ নভেম্বর এই মামলায় আদালতে চার্জ গঠন করেছিল সিবিআই। ১১ নভেম্বর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। আর গত ৯ জানুয়ারি তা শেষ হয়েছিল।
সব অভিযোগ, তথ্যপ্রমাণ পেশ, পাল্টা দাবির মাঝে গত ৯ জানুয়ারি শিয়ালদা আদালতে আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়। আজ এই মামলার রায় আর কিছুক্ষণের মধ্যে।
এছাড়া সিবিআইয়ের তরফ থেকে চার্জশিটে বলা হয়েছিল, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতার অন্তর্বাস পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় তা জোরজবরদস্তি খোলার চেষ্টা করা হয়েছিল, যার জেরে তা ছিঁড়ে যায়। এদিকে অভিযুক্তের মেডিকেল পরীক্ষা থেকে এ রকম কোনো প্রমাণ মেলেনি যে, তিনি সঙ্গমে অক্ষম। ঘটনাস্থল থেকে লালারস মিলেছিল, তা ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারেরই।
চার্জশিটে উল্লেখিত চতুর্থ প্রমাণ হলো, হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত সঞ্জয় রায়ের বাজেয়াপ্ত পোশাকে রক্তের দাগ মিলেছে। পঞ্চম প্রমাণ হলো, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ছোট ছোট চুল। সেগুলোও সঞ্জয়ের বলে জানিয়েছে সিবিআই।
ষষ্ঠ প্রমাণ ব্লুটুথ ইয়ারফোন, যেটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়। সেটি সঞ্জয়ের ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল বলে জানানো হয়েছে সিবিআইয়ের তরফ থেকে। সঞ্জয়ের শরীরে মেলা ক্ষতচিহ্ন হলো সপ্তম প্রমাণ। অভিযুক্তের শরীরে যে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে, সেগুলো নির্যাতিতার প্রতিরোধের ফলেই তৈরি হয়েছিল।
এদিকে সিবিআই চার্জশিটে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কী কী প্রমাণ আছে? চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ প্রথম প্রমাণ, যা থেকে জানা গেছে, গত ৯ অগস্ট ভোরে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলায় গিয়েছিল সঞ্জয় রায়। তার মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দ্বিতীয় প্রমাণ। তা নিশ্চিত করেছে যে, সেই রাতে সঞ্জয় আরজি করেই ছিল।
তৃতীয় প্রমাণ হলো ডিএনএ। খুন হওয়া নারী চিকিৎসকের দেহে মেলা ডিএনএর সঙ্গে মিলে গেছে সঞ্জয়ের ডিএনএ। এর আগে সঞ্জয় দাবি করেছিল, সরকার তাকে ফাঁসাচ্ছে। এমনকি তার আরও অভিযোগ, ডিপার্টমেন্ট তাকে ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেছে।
এরই মাঝে সম্প্রতি এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা মৌমিতা দেবনাথের মা-বাবা। সুপ্রিম কোর্টে তারা জানান, এই ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রমাণ লোপাট হয়েছে এবং এই ঘটনায় একা সঞ্জয় রায় দোষী বলে তারা বিশ্বাস করেন না।
আর কয়েক ঘণ্টা বাকি। তারপরই আরজি কর মামলায় রায় শোনাবে শিয়ালদা আদালতে। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ইতোমধ্যেই একটি বিশেষ সেলে রাখা হয়েছে।
আরজি কর মামলায় শিয়ালদা আদালতে মোট ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল। সিবিআই সঞ্জয়ের ‘ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট’ বা মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে শিয়ালদার অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত সঞ্জয়ের কী সাজা দেয়, সেদিকে নজর সবার।
(ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন