ইউক্রেনের ‘অপারেশন স্পাইডার ওয়েব’: রাশিয়ার ৪০ যুদ্ধবিমান ধ্বংস, ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি

সাইবেরিয়া অঞ্চলে অবস্থিত চারটি সামরিক ঘাঁটিতে ইউক্রেন একটি সাহসী ও জটিল ড্রোন অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার অন্তত ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে বলে দাবি করেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা (এসবিইউ)। দীর্ঘ দেড় বছর পরিকল্পনার পর চালানো এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন স্পাইডার ওয়েব’, যার তত্ত্বাবধান করেছেন স্বয়ং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে অভিযানের নাটকীয় কিছু তথ্য। এসবিইউ প্রথমে বিশেষভাবে তৈরি এফপিভি (FPV) ড্রোন চুপিচুপি রাশিয়ায় পাচার করে। এর পরপরই পাঠানো হয় কাঠের তৈরি মোবাইল কেবিন, যেগুলো রাশিয়ার মাটিতে পৌঁছার পর একটি করে ট্রাকের ওপর বসানো হয়। ওই কেবিনগুলোর ছাদে ছিল রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম। সময়মতো সেই ছাদ খুলে ভেতরে লুকিয়ে রাখা ড্রোনগুলো আকাশে উড়াল দেয় এবং সোজা গিয়ে হামলা চালায় সামরিক বিমানঘাঁটিতে থাকা রুশ যুদ্ধবিমানের ওপর।
ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি ট্রাকের ছাদ খোলার সঙ্গে সঙ্গে একে একে বের হচ্ছে ড্রোন, যা মুহূর্তেই ছুটে যাচ্ছে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুর দিকে।
ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, এই অভিযানে রাশিয়ার অন্তত ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধ্বংস হওয়া বিমানের মধ্যে রয়েছে: টিইউ-৯৫এস স্ট্রেটেজিক বোম্বার, টিইউ-২২এম৩এস সুপারসনিক দূরপাল্লার বোম্বার, এ-৫০ সংকেত ও নিয়ন্ত্রণ বিমান।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের এই অভিযান কেবল প্রযুক্তিগত দক্ষতারই নয়, বরং কৌশলগত চমক এবং গভীর পরিকল্পনার এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিছু বিমানঘাঁটিতে “বিদেশি ড্রোন হামলার” কথা স্বীকার করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অভিযানের মাধ্যমে ইউক্রেন প্রমাণ করেছে যে, তারা রাশিয়ার গভীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ব্যাপক সামরিক ক্ষতি ঘটানোর সক্ষমতা রাখে। এতে যুদ্ধের ময়দানে নতুন মাত্রা যুক্ত হতে পারে এবং রাশিয়া ভবিষ্যতে তাদের সামরিক ঘাঁটির নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে বাধ্য হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/২ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন