বিক্রয় কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার চান ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা

আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে অনলাইন কেনাবেচার কমিশনের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট (ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স) প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সদস্যরা। মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে ই-ক্যাবের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে এই দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সদস্যরা।
ই-ক্যাবের নির্বাচিত নির্বাহী কমিটি না থাকায় প্রশাসক মুহাম্মদ সাঈদ আলীর উপস্থিতিতে সংগঠনের সাধারণ সদস্যরাই এবারের বাজেট প্রতিক্রিয়া তুলে ধরতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রশাসক সাঈদ আলী বলেন, ই-ক্যাবের সদস্যরা প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট প্রত্যাহারের যে দাবি তুলেছে তা যৌক্তিক। আমিও মনে করি সরকার রাজস্ব আদায়ের কৌশল হিসেবে অনলাইন কেনাকাটার কমিশনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করেছে। এতে রাজস্ব না বেড়ে উল্টো কমে যাবে। কারণ অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এই পরিমাণ ভ্যাট দিয়ে ব্যবসা ব্যবসা করতে পারবে না। এতে দেশের বেকারত্ব বাড়বে। সরকারকে তাদের পেছনে ভর্তুকি বাবদ ব্যয় বাড়াতে হবে।
অনলাইন কেনাকাটার কমিশনের ওপর ভ্যাট শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনলে রাজস্ব আরও বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রশাসক বলেন, ব্যবসা বাড়লে প্রতিষ্ঠানের সরকার এখাত থেকে অনেকভাবে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে পারবে।
এর আগে ই-কমার্স উদ্যোক্তারা তাদের দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবি সুনির্দিষ্ট আকারে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পৌঁছে দেওয়ারও আশ্বাস দেন ই-ক্যাবে নিযুক্ত প্রশাসক সাঈদ আলী।
অনুষ্ঠানে চালডাল ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালন কর্মকতা (সিওও) জিয়া আশরাফ বলেন, ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে ব্যবসা করা কঠিন হবে। ই-কমার্স খাতের সমপ্রসারণকে উৎসাহিত করতে হলে এ খাতকে ভ্যাটমুক্ত রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশে একটি বড় প্রত্যাশা ছিল ডিজিটাল ইনক্লুশন। ই-কমার্স খাত এই প্রত্যাশা পুরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমি মনে করি ই-কমার্স খাতকে সঠিক ভাবে বিকশিত করতে হলে এখাতে ২ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া দরকার।
পাইকারি লিমিটেড বিডির এমডি অন্তু করিম বলেন, ই-কমার্স খাতকে পৃষ্ঠপোষকতা না করলে এই খাত সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। আমরা যারা বিটুবি অর্থাৎ বড় পরিসরে পণ্যের বেচাকেনা করি, তাদের জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট অনেক বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এতে পণ্যের দাম বেড়ে গিয়ে ভোক্তার ওপর চাপ তৈরি করবে। ফলে ভোক্তা অনলাইনে কেনাকাটা করতে নিরুৎসাহিত হবে।
দারাজ বাংলাদেশের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস (রুশো) বলেন, আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি, বিক্রয় কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করতে হলে অনেক পণ্যের খুচরা মূল্য সাধারণ স্টোর থেকে অনলাইনে বেশি পড়বে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে।
মুহাম্মাদ ইসমাইল হুসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডায়াবেটিস স্টোর লিমিটেডের মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, বিক্রয় বাজার ডটকমের এস এম নুরুন নবী, ইপাইকার এক্সটেন্সিভ লিমিটেডের চেয়ারম্যান শেখ শাফায়াত হোসেন, আমার গেজেটের স্বাত্ত্বাধিকারী মো. সাইফুল ইসলাম, মেনসেন মিডিয়ার সিইও ইঞ্জি তৌহিদা হায়দার, টপ ট্রেনডজের এম এম রায়হানা বেগম, অদম্য প্রকাশের স্বত্বাধিকারী নাজিবউল্লাহ রাফে, নিজল ক্রিয়েটিভের আবু সুফিয়ান নিলাভ ভূইয়া, স্নো এন রেইনের কামরুল ইসলাম, টপ মোরের স্বত্বাধিকারী কাজী মুকিতুজ্জামান ও এটোভা টেকনোলজির সিও ফেরদৌস আলম ঈপন প্রমুখ।(ঢাকাটাইমস/০৩জুন/এমআর)

মন্তব্য করুন