রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত গঠন

সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে ওই কর্মকর্তাকে আটক করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এবং ঘটনার তদন্তে একটি তদন্ত আদালত গঠন করেছে।
শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) পরিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, সম্প্রতি একটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক জনৈক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগটি প্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৭ জুলাই তারিখে ওই সেনা কর্মকর্তাকে তার নিজ বাসস্থান রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে সেনা হেফাজতে নেয়া হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, ঘটনাটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পূর্ণ তদন্ত সমাপ্তি সাপেক্ষে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ওই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করা হচ্ছে। এছাড়াও, তার কর্মস্থল থেকে অনুপস্থিত থাকা সংক্রান্ত ব্যত্যয় এর বিষয়ে অপর আরেকটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষে আদালতের সুপারিশক্রম সেনা আইন অনুযায়ী দায় নিরূপণ (Command Responsibility) করত প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, শৃঙ্খলাপরায়ণ এবং পেশাদার প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কোনো সুযোগ নেই। রাজনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার সকল সদস্যের মধ্যে পেশাদারিত্ব, শৃঙ্খলা ও সাংবিধানিক দায়িত্ববোধ বজায় রাখার প্রতি সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.নাজিম-উদ-দৌলা জানিয়েছিলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীদের মেজর সাদিক নামে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে— এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। এরপরেই তাকে হেফাজতে নিয়েছে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, তার বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হলে নিঃসন্দেহে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন আছে এর বেশি এই মূহুর্তে বলা আমার মনে হয় সমীচীন হবে না।

মন্তব্য করুন