কোরবানির পশুর যেসব অঙ্গ খাওয়া ইসলামে নিষেধ

মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কোরবানি দেওয়া হয় আল্লাহর আনুগত্য স্বীকারের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর জন্য। এই বিধান শুধু আমাদের জন্যই নয়, সেই আদম (আ.)-এর সময় থেকে চলে আসছে। প্রত্যেক নবীর সময় কোরবানির এই মহান বিধান ছিল। প্রত্যেক নবীর উম্মতদের আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি অর্জনে এই ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা সে সম্পর্কে বলেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি—যাতে আল্লাহ তাদের যে চতুষ্পদ জন্তুসমূহ দিয়েছেন, তাতে তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। (এই বিভিন্ন নিয়ম-পদ্ধতির মূল লক্ষ্য কিন্তু এক আল্লাহর নির্দেশ পালন) কারণ তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য। সুতরাং তোমরা তাঁরই আনুগত্য করবে। আর সুসংবাদ দাও বিনীতদের।’ (সুরা হজ: ৩৪)
আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য যে পশুগুলো খাওয়া হালাল করেছেন, সেগুলোর মধ্যে কিছু পশু কোরবানির জন্য বৈধ ঘোষণা করেছেন। এসব পশু দিয়েই আমরা কোরবানি করে থাকি। কোরবানির পশুর মাংস খাওয়া সম্পূর্ণ হালাল। তবে তার শরীরের কিছু অঙ্গ রয়েছে, যা খাওয়া ইসলামে নিষেধ। কেননা কোরবানির পশুর ওই সব অঙ্গ খাওয়া মহানবী (সা.) পছন্দ করতেন না। সে হিসেবে শুধু কোরবানির পশুই নয়, যেকোনো হালাল পশুর এসব অঙ্গ খাওয়া নিষিদ্ধ বলে মনে করেন ইসলামবিষয়ক গবেষকেরা।
মহান আল্লাহর খুশির জন্য কোরবানি দেওয়া হয়। যে কোনো ইবাদত সহিহ ও কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে তা একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য হতে হবে। আর ইসলামি শরিয়ত নিধার্রিত নিয়ম-নীতি অনুযায়ী তা করা। কোরবানির ক্ষেত্রে এ দুটি শর্ত সমানভাবে মানতে হবে।
বর্ণিত হয়েছে, (মনে রেখো, কোরবানির পশুর) গোশত অথবা রক্ত আল্লাহর কাছে কখনোই পৌঁছায় না; বরং তাঁর কাছে কেবলমাত্র তোমাদের পরহেজগারিই পৌঁছায়। (সুরা হজ, আয়াত, ৩৭)
আমাদের সমাজে অনেকে পশু কোরবানি দেওয়ার সময় বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যান। এমন হলে কোরবানির পশু খাওয়া কি জায়েজ হবে?
এর উত্তর হচ্ছে, ইচ্ছেকৃত বিসমিল্লাহ না বললে কোরবানি জায়েজ হবে না। তবে যদি ভুলে বিসমিল্লাহ না বলে, তাহলে কোরবানি হয়ে যাবে। কোরবানির পশুর গোশত খাওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। (হেদায়া আখিরাইন: ৪১৯)
কোরাবানির জন্য নির্ধারিত পশুর মাংস নিদ্বিধায় খাওয়া হালাল হলেও কিছু অংশ খাওয়া হালাল নয়। এর অন্যতম হলো হালাল প্রাণীর রক্ত খাওয়া, যা ইসলামে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) ৭টি জিনিস খাওয়া অপছন্দ করতেন।
এ প্রসঙ্গে হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে, বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত মুজাহিদ (রহ.) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ (সা.) পশুর সাত জিনিস খাওয়াকে অপছন্দ করেছেন। তা হলো- ১. প্রবাহিত রক্ত। ২. অণ্ডকোষ। ৩. চামড়া ও গোশতের মাঝে সৃষ্ট জমাট মাংসগ্রন্থি। ৪. মূত্রথলি। ৫. পিত্ত। ৬. নর ও মাদি পশুর গুপ্তাঙ্গ।
হাদিসের অনুসরণে প্রিয় নবী (সা.)-এর অপছন্দনীয় পশুর নির্ধারিত অংশগুলো না খাওয়াই উত্তম।
(ঢাকাটাইমস/৫ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন