কুরবানির পশু জবাই করার সঠিক নিয়ম পদ্ধতি

ইসলাম ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ জুন ২০২৫, ১৫:৩৯
অ- অ+

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু উৎসর্গ দেয়াকে কোরবানি বলে। যারা সামর্থ্যবান তাদের জন্য কোরবানি ওয়াজিব। আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানকে কোরবানি করতে উৎসাহ দিয়েছেন। সামর্থ্য থাকার পরও যারা কোরবানি করে না, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তবে এই ইবাদত কবুলের জন্য তা যথাসময়ে সঠিক পদ্ধতিতে করা আবশ্যক। জেনে নিন পশু কোরবানির সময় ও পদ্ধতি-

কোরবানির সময়কাল হলো জিলহজের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। এই তিন দিনের যেকোনো দিন কোরবানি করা জায়েজ। তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সর্বাপেক্ষা উত্তম। তারপর দ্বিতীয় দিন। তারপর তৃতীয় দিন। জিলহজ মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পর কোরবানি করা শুদ্ধ নয়।

একইভাবে ঈদুল আজহার নামাজের আগে কোরবানি করা বৈধ নয়। অবশ্য যে স্থানে ঈদের নামাজ বা জুমার নামাজ বৈধ নয়, সে স্থানে ১০ জিলহজ ফজরের নামাজের পরও কোরবানি করা জায়েজ।

নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক কোনো ব্যক্তি ১০ ও ১১ জিলহজ যদি সফরে থাকে তারপর ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে বাড়িতে আসে, তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।

যদি কোনো মুকিম ব্যক্তি গরিব হয় এবং ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে আল্লাহ তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বানিয়ে দেন, তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।

নিজের কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজে জবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা জবাই করাবে। এ অবস্থায় নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম।

জবাই করার সময় কোরবানির পশু কিবলামুখী করে শোয়াবেন। অতঃপর ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করবে। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া জায়েজ আছে।

পশু জবাই করার সময় মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়ত করবে যে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম।

জবাই করার সময় চারটি রগ কাটা জরুরি : ১. কণ্ঠনালি, ২. খাদ্যনালি, ৩. দুই পাশের মোটা রগ, যাকে ওয়াজদান বলা হয়। এই চারটি রগের মধ্যে যেকোনো তিনটি কাটা হলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না।

জবাই করার আগে ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নেওয়া মুস্তাহাব। কোরবানির পশুকে এমনভাবে জবাই করা উচিত, যাতে পশুর কোনো প্রকার অপ্রয়োজনীয় কষ্ট না হয়। এমনিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন স্থানে জবাই করা উচিত। জবাইকারী ব্যক্তির সঙ্গে যদি কেউ ছুরি চালানোর জন্য সাহায্য করে, তার জন্যও ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলা ওয়াজিব।

কোরবানির পশু কিবলামুখী করে শোয়ানোর পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে : ‘ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাজি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাবিবল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন। আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়ালাকা।’

এই দোয়া পাঠ করার পর ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে পশু জবাই করবে। পশু জবাই করার পর নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে—‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মদ ও খালিলিকা ইবরাহিম আলাইহিমাস সালাতু ওয়াস সালাম।’ যদি একাধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি করে তবে ‘মিন্নি’র স্থলে ‘মিন্না’ পাঠ করবে এবং শরিকদের নাম পাঠ করবে। তবে তাদের নাম শুধু নিয়ত করলে হবে।

(ঢাকাটাইমস/৫ জুন/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাঙ্গুনিয়ায় শ্বশুরকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা 
মির্জাপুরে সুপার সপে আগুন, ৩ কোটি টাকার ক্ষতি
জামালপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু
ঝিনাইদহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা