কুমিল্লা নির্বাচনে সাক্কু ও সীমার মনোনয়নপত্র জমা
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বৃহস্পতিবার আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার ও কুসিক নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডলের কার্যালয়ে গিয়ে তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন দেশের প্রধান দুই দলের এই মেয়র প্রর্থীরা।
মনিরুল হক সাক্কু ও আঞ্জুম সুলতানা সীমার মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, মেয়র পদে ছয়জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন, শেষ দিন পর্যন্ত তাদের মধ্যে পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ ছাড়া ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৫০ জন এবং নারীদের জন্য সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন ৪২ জন।
সদ্য সাবেক মেয়র ও বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির নেতা মোস্তাক মিয়া, আউয়াল খান, সামসুউদ্দিন দিদার, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, ফজলুল হক ফজলু, অ্যাডভোকেট কায়মুল হক রিন্টু, জসিম উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, সাজ্জাদুল কবির সাজ্জাদসহ বিএনপির নেতারা।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে উন্নয়নের ট্রেন চলা শুরু হয়েছে। যেসব কাজ বাকি রয়েছে সেগুলো আবার নির্বাচিত হয়ে শেষ করব।’
এর আগে বি্এনপির মনোনয়ন নিয়ে গত মঙ্গলবার কুমিল্লায় ফিরে সাক্কু বলেছিলেন, কুমিল্লায় দলে কোনো বিরোধ নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন তার বাবা জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আফজল খান, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, আওয়ামী লীগের নেতা নুর-উর-রহমান মাহমুদ তানিম, সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, শফিক শিকদার, শাহিনুল ইসলাম শাহিন, চিত্তরঞ্জন ভৌমিক, জাকির হোসেনসহ দলের নেতারা।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে কুসিকের সদ্য সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সীমা বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় নির্বাচন করতে চাই। কুমিল্লা নগরীতে অনেক সমস্যা রয়েছে। কুমিল্লা মহানগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা ও যানজট সমস্যা। এই সমস্যাগুলো নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে সমাধান করতে চেষ্টা করব।’
২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুসিকের প্রথম নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েন মনিরুল হক সাক্কু। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফজল খানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়াদ শেষে প্রশাসকের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন তিনি।
এবারের নির্বাচনে সাক্কু লড়ছেন তার দল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে। তার বিপরীতে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে গতবারের প্রার্থী আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমাকে। সীমার বাবা আফজল খান ও স্থানীয় এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরোধ দীর্ঘদিনের পুরনো। এবারের নির্বাচনে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের ছেলেও মনোনয়ন-প্রত্যাশী ছিলেন। তবে শিকে ছিঁড়েছে আফজল খানের মেয়ে সীমার ভাগ্যে।
সীমা দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর বাহাউদ্দিন বাহারের বাসায় গেলে তাকে তিনি (বাহার) বলেন, দোয়া ছাড়া কিছু দেয়ার নেই তার। পরে সাংবাদিকদের বাহার বলেন, সীমাদের মনোনয়ন-ভাগ্য ভালো।
আগামী ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ভোট নেয়া হবে। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল আজ বৃহস্পতিবার। প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ মার্চ। ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন।
(ঢাকাটাইমস/২মার্চ/মোআ)
মন্তব্য করুন