আবারও ব্যাটিং ব্যর্থতা, ২২৭ রানে অলআউট বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলতে নেমেই যেনো পুরোনো রোগটা আবারও মাথাচারা দিয়ে উঠলো বাংলাদেশের। ক্যারিবীয়ানদের প্রথম ওয়ানডেতে যেখানে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে প্রায় ৩০০ রানের লক্ষ্য দাাঁড় করিয়েছিল বাংলাদেশ সেখানে আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় মাত্র ২২৭ রানেই গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ।
আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সেন্ট কিটসের বাসেটেরের ওয়ার্নার পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্যারিবীযান বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন টাইগার ব্যাটররা। তাসের ঘরের মতো ভাঙতে থাকে বাংলাদেশর ব্যাটিং লাইন-আপ। যার ফলে ১১৫ রানেই সাজঘরে ফিরে যান ৭ টাইগার ব্যাটার। এরপরেই জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তানজিম হাসান সাকিব। অষ্টম উইকেটে এই জুটির ৯২ রানে ভর করে ২২৭ রানে থামল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন তানজিদ হাসান তামিম ও সৌম্য সরকার। তবে নিজেদের জুটিকে আজ বেশিদূর নিয়ে যেতে ব্যর্থ হলেন তারা।
দিনের শুরুতেই আজ সাজঘরে ফিরে গেলেন সৌম্য সরকার। ৫ বলে মাত্র ২ রান করে জেইডেন সিলসের বলে মিড অনে গুড়াকেশ মোতির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য। তার বিদায়ে ২৬ রানেই ওপেনিং জুটি ভাঙল বাংলাদেশের।
সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন লিটন কুমার দাস। তবে খুব বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি তিনি। ১৯ বলে মাত্র ৪ রান করে জেইডেন সিলসের বলে এভিন লুইসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। প্রথম ম্যাচেও ব্যর্থ ছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে ফিরে যান ২ রান করে। তার বিদায়ে ৪১ রানেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
৪১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন তানজিদ হাসান তামিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে নিজেদের জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন তারা। ৫ বলে মাত্র ১ রান করে জেইডেন সিলসের তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মিরাজ। তার বিদায়ে ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা।
মিরাজের বিদায়ের পরের ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান একপ্রান্ত আগলে রাখা তাসজিদ হাসান তামিম। মাত্র ৪ রানের জুটি অর্ধশতক মিস করেন তিনি। ৩৩ বলে ৪৬ রান করে জাস্টিন গ্রিভসের বলে রোস্টন চেজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ৬৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
৬৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন আফিফ হোসেন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন তারা। তবে দলীয় ১০০ রানে আফিফ হোসেনের বিদায়ে ৩৬ রানে ভাঙে এই জুটি। ২৯ বলে ২৪ রান করে গুড়াকেশ মোতির বলে মিড অফে শেরফান রাদারফোর্ডের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন আফিফ। যার ফলে ভেঙে যায় ৩৬ রানের জুটি।
আফিফের বিদায়ের পর সাজঘরে ফিরে যান জাকের আলী অনিকও। তাকেও ফেরান গুড়াকেশ মোতি। গুড়াকেশ মোতির বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান জাকের। জাকেরের বিদায়ে ১০৪ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।
জাকেরের পথ ধরে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রিশাদ হোসেনও। রানের খাতা খোলার আগেই মারকুইনো মিন্ডলের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ১১৫ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপরেই জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তানজিম হাসান সাকিব। আজ ওয়েস্ট ইন্ডজের বিপক্ষে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তানজিম সাকিবও ছিলেন অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে। তবে ৬২ বলে ৪৫ রান করে জেইডেন সিলসের চতুর্থ শিকার হয়ে প্যাভিলিযনে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ভাঙে ৯২ রানের জুটি।
এটিওয়ানডেতে ৮ম উইকেটে বাংলাদেশের নতুন রেকর্ড রানের জুটি। এতদিন বাংলাদেশের রেকর্ড রানের জুটি ছিল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোহাম্মদ মিঠুনের। ২০১৯ সালে নেপিয়ারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৪ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা।আজ ৮ম উইকেটে সেই জুটির রানকে পেছনে ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম।
এই জুটি ভাঙার পর আর বেমিদূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪৫.৫ ওভারেই ২২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রান করে মাহমুদউল্লাহ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে মাত্র ২২ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন জেইডিন সিলস।
(ঢাকাটাইমস/১০ ডিসেম্বর/এনবিডব্লিউ)
মন্তব্য করুন