একপেশে নাকি ফাইনালের মতো ফাইনাল?
দুটো সেমিফাইনালই ছিল একপেশে। কোনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি সেখানে। পাকিস্তানের কাছে ইংল্যান্ডের অসহায় আত্মসমর্পণে বিবর্ণ প্রথম সেমিফাইনাল। এজবাস্টনে টাইগাররা টাইগার না থেকে কাগুজে বাঘের মতো খেলেছে। এখানেও একপেশে সেমিফাইনাল। এবার ফাইনাল তো কী তবে?
ভারতের প্রতিপক্ষ যেখানে পাকিস্তান, সেখানে তো এই আশঙ্কার ভিত্তি আছেই। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান, দুই দলের শক্তির ব্যবধান যে এই আশঙ্কারই জন্ম দিয়েছে।তবে দল যেহেতু পাকিস্তান, তাই এর উল্টোটাও ঘটে যেতে পারে।
ভারত পাকিস্তান ফাইনাল তাতে বাংলাদেশের কী? লন্ডনের বাংলাদেশি প্রবাসীদের মধ্যে আজকের ফাইনাল নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ নেই। বাংলাদেশের বিদায়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে তাদের আগ্রহের মৃত্যু ঘটেছে।
ভারতীয় দর্শকরা বরাবরই সিরিয়াস। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেমিফাইনালে বলতে গেলে পুরো গ্যালারি ছিল ভারতীয় দর্শকদের দখলে। আজও যে ভারতীয় সমর্থকদের আধিক্য থাকবে সেটা ধরেই নেওয়া যায়। ইংল্যান্ডে পাকিস্তানিদের সংখ্যা কম নয়, ১২ লাখের উপরে। কিন্তু গ্যালারিতে ভারতীয় পতাকাই বেশি উড়বে।
সেটা বোঝা গেল ম্যাচের আগের দিন, মানে গতকাল। কোহলিরা যখন ওভালে এসে পৌঁছালেন প্রাকটিস করতে, তখন মাঠের বাইরে ভারতীয় সমর্থকদের জটলা। তারা অপেক্ষা করলেন প্রাকটিস শেষ না হওয়া পর্যন্ত। ভারতীয় দল বের হয়ে গেলেন, সমর্থকরা ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া বলে স্লোগান দিলেন। অথচ সরফরাজ আহমেদের দেখতে একজন পাকিস্তানিও দেখা গেল না স্টেডিয়াম গেইটের বাইরে।
তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কভার করতে পাকিস্তান থেকে আসা সাংবাদিকরা জানান, ফাইনালে ওঠায় পাকিস্তানে এ ম্যাচ নিয়ে দারুণ জমজমাট অবস্থা। পাকিস্তান যে ফাইনালে ওঠবে, এটা আশা করতে পারেননি তারা।
গত পাঁচ দেখায় চারবারেই ভারতের কাছে হারতে হয়েছে পাকিস্তানকে। কাগজ কলমে এ ম্যাচেও ভারত অনেক এগিয়ে। কিন্তু পাকিস্তানি সাংবাদিকদের অনেকেই বললেন, ‘এ ম্যাচ পাকিস্তান জিত জায়গা।’
গ্রুপ পর্বের ম্যাচটার কথা ভুলে গিয়ে ফাইনালে ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘোষণা দিয়েছেন অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। তিন ম্যাচে জয়ের সুখস্মৃতিতে তিনি আত্মবিশ্বাসী। ইনজুরি কাটিয়ে আমির ফিরছেন একাদশে। ভারতীয় দিলে আবার অশ্বিনকে নিয়ে অনিশ্চয়তা।
ওভালের উইকেট নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। একেবারে ব্যাটিং ট্রাক। বোলারদের ঘাম ঝরিয়েও এখানে সফল হওয়ার সম্ভাকমা কম। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টির তেমন সম্ভাবনার কথা হলা হয় নাই। অবশ্য বৃষ্টিতে ম্যাচ পণ্ড হলে চিন্তা নেই। পরের দিনই রিজার্ভ ডে।
আজকের ফাইনালে অসম লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই। মানে বাজি ভারতকে নিয়ে। তারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। এবারও ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরবেন কোহলিরা, এই সম্ভাবনা দেখছেন বেশিরভাগ ক্রিকেট পণ্ডিত।
তাহলে কী আরেকটা অসম ম্যাচ? তবে দিলটা যেহেতু পাকিস্তান, তাই কোনো কিছুই বলা যায় না। যেটা কোহলিও স্বীকার করেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যত খারাপ রেকর্ডই হোক, শক্তিধর ভারতকে হারিয়ে যদি শিরোপা জিতে ফেলে পাকিস্তান তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ দলটার নাম পাকিস্তান।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/ডিএইচ)
মন্তব্য করুন