মুসাকে উদ্ধারে হেলিকপ্টার প্রস্তুত
পাপুয়া নিউগিনির সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট কার্সটেঞ্জ পিরামিড জয় করতে গিয়ে দুর্গম পাহাড়ে আটকা পড়া বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট জয়ী মুসা ইব্রাহীম ও তার দলকে উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হলেই উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
সাংবাদিক আশীফ এন্তাজ রবি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানিয়েছেন।
পাপুয়া নিউগিনির সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট কার্সটেঞ্জ পিরামিড জয় করতে গিয়ে আরও দুই সহযাত্রীর সঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে আটকে পড়ে আছেন গত তিন দিন ধরে। হেলিকপ্টার দিয়ে তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছে। আবহাওয়া খুবই খারাপ থাকার কারণে সেটি সফল হয়নি। অভিযাত্রী দলের খাবারও শেষ বলে জানা গেছে।
মুসার সঙ্গে রয়েছেন ভারতের এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত ও নন্দিতা চন্দ্রশেখর। মোট তিনজনের পর্বতারোহী দলের নেতা মুসা ইব্রাহীম।
ইন্দোনেশিয়ার নাবিরে থেকে পাঁচ থেকে ছয় দিন ট্রেকিং শেষে অভিযাত্রীরা ১৬ হাজার ২৩ ফুট উঁচু মাউন্ট কার্সটেঞ্জ পিরামিড চূড়া জয় করার কথা ছিল এই অভিযানে।
গত ২৯ মে সোমবার ইন্দোনেশিয়ার বালির উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন মুসা। বাংলাদেশের কৃষিখাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান নীলসাগর গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় মুসা ইব্রাহীমের এবারের অভিযানের নাম হচ্ছে ‘নীলসাগর গ্রুপ মাউন্ট কার্সটেঞ্জ পিরামিড অভিযান।
রবি লিখেছেন, একটু আগে, একজন ভারতীয় পর্বতারোহীর স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে মুসা ইব্রাহীমের সরাসরি যোগাযোগ এবং বার্তা বিনিময় হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত দূতাবাসের মাধ্যমে হেলিকপ্টার রেডি করেছেন। উনি রাত জেগে পুরো বিষয়টি মনিটর করছেন। আল্লাহ চাহে তো, আবহাওয়া আরেকটু অনুকূলে এলেই উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
মুসা ও তার দলকে উদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও। ঘটনা জানার পর মুসার সঙ্গে মন্ত্রীর কথাও হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক রবি। প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে মুসার কথপোকথনের একটি লিঙ্ক ও দিয়েছেন তিনি।
রবি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘ফেসবুকে এই নিয়ে স্ট্যাটাস দেবার পর অসংখ্য মানুষ আমাকে লিখেছিলেন, মন্ত্রী শাহরিয়ার ভাইকে জানান। উনি জানলেই সব হবে। আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, একটা দেশের একজন মন্ত্রীর উপর সাধারণ মানুষের কতখানি আস্থা থাকলে, এভাবে মানুষ লিখতে পারে। যদিও আমি বিষয়টিকে ততখানি গুরুত্ব দিইনি।’
‘যাই হোক, সাংবাদিক প্রণব সাহা এবং অ্যাকটিভিস্ট ইফরিত জাহিন কুঞ্জ অতি দ্রুত মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরই মধ্যে পুরো প্রক্রিয়ায় যুক্ত হোন মুসার স্ত্রী রিমি । এরপর পুরো ব্যাপারটি অবিশ্বাস্য গতিতে আগায়। এই মুহূর্তে হেলিকপ্টার রেডি। আবহাওয়া আরেকটু ভালো হলেই তারা উদ্ধার অভিযানে নেমে পড়বে।’
রিব আরও লিখেন- আমি গর্বিত, আমি সেই দেশের সন্তান, যে দেশের ইন্টারনেট পেনিট্রেশন ১৫% , সেই সামান্য ইন্টারেনেটেই আমাদের একজন মন্ত্রী আছেন, যাকে রাত বিরাতে নক করলেই, তিনি সাড়া দেন। আমাদের অনেক হতাশা আছে, সমস্যারও শেষ নেই। তারপরও শাহরিয়ার সাহেবের এই ব্যাপারটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। মুসা পাপুয়া নিউগিনির সর্বোচ্চ চূড়া বিজয় করে নামার সময় এই দুর্ঘটনায় পড়লো। ইতিহাসের মুসার নাম লেখা থাকবে পর্বতারোহী হিসেবে।
আমি চাই, শাহরিয়ার সাহেবের নামটিও লেখা থাকুক। এইরকম অবিশ্বাস্য একটি উদ্যোগ নেবার জন্য। এত দ্রুত গতিতে বাংলাদেশের একজন মন্ত্রী পুরো ব্যাপারটি সমাধান করে ফেললেন, প্রকৃত স্যালুট উনার প্রাপ্য।
আমরা একটি সুন্দর সকালের অপেক্ষায় থাকি। সবকিছু এখন ঠিকভাবে শেষ হোক। মুসা ফিরে আসুক আমাদের মাঝে। এখন সম্মিলিতভাবে করজোরে সেই প্রার্থনাই করি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/জেডএ)
মন্তব্য করুন