চালের মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে বগুড়ার সাধারণ মানুষ
বগুড়ায় অস্থির হয়ে উঠছে চালের বাজার। একদিকে বানের জলে ভেসে গেছে লাখো হেক্টর জমির ফসল। অন্যদিকে সিন্ডিকেটের দৌড়াত্ম। এই দুইয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও পড়েছেন বিপাকে। তাদের অভিযোগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। দাম বাড়ার পেছনে সরকারিভাবে বাজার মনিটরিং না করাকে দায়ী করছেন এসব মানুষ। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, চালকল মালিকরা বেশি দামে চাল বিক্রি করায় বাড়ছে দাম।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে বরাবরের মতই এবারও বগুড়ায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই অঞ্চলে যে ক্ষতি হয়েছে তা দশমিক শুন্য এক শতাংশ। এই ক্ষতি চালের বাজারে প্রভাব পড়ার মত না বলে জানা গেছে।
তথ্যসূত্রে আরও জানা গেছে, বগুড়ার সরকারি খাদ্য গুদামে বর্তমানে চাল মজুদ আছে ১৫ হাজার ৪৫২ মেট্রিকটন। গম মজুদ আছে ছয় হাজার ২০৭ মেট্রিক টন। পুরো জেলায় বর্তমানে জনসংখ্যা ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮১। প্রতিদিন গড়ে জন প্রতি চালের চাহিদা ৪৫৩.৬ গ্রাম। সেই অনুযায়ী প্রতিদিন গোটা জেলায় চালের চাহিদা এক হাজার ৫৮২ মেট্রিক টন। বার্ষিক চাহিদা ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৫০৩ মেট্রিক টন।
বগুড়ার বাজারে তুলনামূলক চালের আমদানি থাকলেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। পাইকাররা জানালেন মিল থেকে বেশি দামে চাল কেনায় তারাও বেশি দামে চাল বিক্রি করছেন।
চাল ব্যবসায়ী নেতারা জানালেন, কিছু অসাধু মিলার হাজার হাজার মেট্রিক টন চাল গোপনে মজুদ রেখে দাম বৃদ্ধি করেছে।
বগুড়ার খুচরা চালের বাজার গোদারপাড়া, রাজাবার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিআর ২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫০ টাকা দরে। এছাড়া বিআর-২৯ ৪৭-৫০ টাকা, মিনিকেট ৫৭-৫৯ টাকা, লালপাইজাম ৬০-৬২ টাকা এবং সবচেয়ে বেশি মোটা চাল বিআর-১১ বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৪ টাকা দরে।
গোদারপাড়া বাজারের ইসলাম চালঘরের মালিক সিরাজুল ইসলাম জানান, এবারে ধানের ফলন কম হয়েছে। এবার ধানের মণ ১২০০ টাকা। সে কারণে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে।
শহরের রাজাবাজার রেলওয়ে মার্কেটের ভাই ভাই চাল ঘরের মালিক জয়ন্ত জানায়, চালের দাম বেশি হওয়ায় দোকানে বেশি চাল তুলতে পারছি না। গ্রাহক চাল নিতে এতে দাম শুনেই হতাশ হচ্ছে।
বগুড়া জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হাজার হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে। তিনি চালের বাজারে সংকট সৃষ্টিকারীদের খুঁজে বের করতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সাহা বলেন, এবার ধানের ফলন কম হয়েছে এই কথাটি সঠিক নয়। আবহওয়া বৈরীর কারণে এই অঞ্চলে যে ক্ষতি হয়েছে তা দশমিক শুন্য এক শতাংশ। এই ক্ষতি চালের বাজারে প্রভাব পড়ার মত না। বগুড়ায় চালের চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে।
ঢাকাটাইমস/১৮জুন/প্রতিনিধি/এমআর
মন্তব্য করুন