জাবিতে টাকা নিয়ে দোকান বসাল ছাত্রলীগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হল ও ব্যবসায় অনুষদের সামনে চাঁদার বিনিময়ে ভাসমান দোকান বসানোর অভিযোগ উঠেছে আল-বেরুনী হলের ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। হলটির আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অর্ণব সরকার ও হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মাহমুদুল হাসান রিজু দোকানগুলো বসিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে প্রশাসন বেশ কয়েকবার জায়গাটি দখলমুক্ত করলেও আদতে তা এখনো দখলমুক্ত হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অবৈধভাবে এই দুই স্থানে বসানো হয়েছে পিঠা, চটপটি, বার্গারসহ ১১টি দোকান। দুপুুরের পর থেকে এসব দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। চারদিকে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ তো রয়েছেই।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি অর্ণব সরকার ও আল-বেরুনী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মাহমুদুল হাসান রিজু পাঁচ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে এসব দোকান বসিয়েছেন। এর মধ্যে ‘ইমরান বার্গার স্পট’ থেকে দুই হাজার টাকা ও অপর একটি বার্গারের দোকান থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছেন রিজু। আর ‘মায়ের দোয়া চটপটি ও ফুচকা’ থেকে রিজু ও অর্ণব মিলে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এ ছাড়া হলের সামনে ‘ইয়াসিনের পিঠার দোকান’ থেকে অর্ণব নিয়েছেন ১৫ হাজার টাকা। এককালীন এসব টাকা নেওয়ার পরও দোকানিদের কাছ থেকে প্রতি মাসেই তারা টাকা নিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে।

তবে একজন চটপটি বিক্রেতা জানান, তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। ভাইদের (অর্ণব ও রিজু) সঙ্গে কথা বলে তিনি বসেছেন। তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ভাইয়েরা আরও কিছু দোকান বসিয়েছেন। ফলে ওই এলাকা ঘিঞ্জি হয়ে গেছে। এখন যেকোনো সময় প্রশাসন গিয়ে দোকানগুলো উঠিয়ে দিতে পারে।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয় হলটিতে থাকা ছাত্রলীগের দুই নেতার সঙ্গে। তারাও টাকা নিয়ে দোকান বসানোর কথা নিশ্চিত করেন। ছাত্রলীগের দুই নেতা বলেন, ‘আগে দোকানগুলো যখন মেডিকেল সেন্টারের সামনে ছিল, তখন সেখান থেকে নিয়মিত হারে চাঁদা তোলা হতো। গত বছর প্রশাসন সেখান থেকে দোকানগুলো উচ্ছেদ করে। এখন নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে পর্যায়ক্রমে দোকানগুলো আবার হল ও ব্যবসায় অনুষদের সামনে বসানো হচ্ছে।’

তবে চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অর্ণব সরকার। তিনি বলেন, ‘তারা গরিব মানুষ, তাদের অনুরোধ ফেলতে পারিনি। তাই এখানে ব্যবসার মাধ্যমে তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘সেখানে কোনো বৈধ দোকান নেই। আমরা ওই স্থানে কোনো দোকান বসানোর অনুমতিও দেব না।’ দখলের বিষয়ে নুরুল আমিন বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে অভিযান চালাই। পরবর্তীতে আবার তারা বসে। আমাদের কাছে নিরাপত্তা বাহিনী না থাকায় সব সময় অভিযান চালানো সম্ভব হয় না।’