যৌনকর্মী থেকে বলিউডের নামকরা চিত্রনাট্যকার!

বিশ্বের অন্যতম বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বলিউডের অন্দরে লুকিয়ে আছে অজানা অনেক কথা। বড়ই অদ্ভুত এই জগত। হাজার হাজার মানুষ এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন। এক একজনের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন গল্প। পুরনো অতীত ছেড়ে বলিউডে এসে আজ তারা সুপ্রতিষ্ঠিত। কেউ চিত্রনাট্য, কেউ পরিচালনায়, কেউ বা আবার অভিনয়ে সুপারহিট।
তেমনই একজন হলেন সাগুফতা রফিক। বলিউডের অন্যতম একজন চিত্রনাট্যকার। মাত্র ১১ বছর বয়সে সাগুফতা পা রাখেন চলচ্চিত্র জগতে। একটি ছোট চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন। এরপর তাকে একটি প্রাইভেট পার্টিতে নাচের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। তখন তার বয়স ১২ বছর। সেখান থেকেই বলিউডের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
সাগুফতার যখন মাত্র ১৭ বছর বয়স, তখন সেই ব্যক্তি তাকে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ১০ বছর তিনি যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করেন।
শুধু এটুকুই নয়, সাগুফতার জীবনে রয়েছে আরও এক দুঃখের কাহিনি। তিনি জানতেন না তার জন্মদাত্রী মা কে। যদিও তার ছোটবেলা কেটেছিল আনওয়ারি বেগম নামে এক অভিনেত্রীর উপর নির্ভরশীল থেকে।
আনওয়ারি তাকে যেমন যাবতীয় সুখ স্বাচ্ছন্দ্য দিয়ে মানুষ করেছিলেন, একসময় তা কেড়েও নেন। বলেন, এবার সাগুফতাকে নিজের মতো চালিয়ে নিতে হবে। তখন থেকে আবার নাচের অভ্যাস শুরু করেন। বিভিন্ন বারে নাচের পাশাপাশি যৌনকর্মীর পেশাতেও কাজ শুরু করেন।
দীর্ঘদিন এভাবে চলতে চলতে ১০ বছর পর সাগুফতাকে যৌনপেশা থেকে বের করে আনেন পরিচালক ও প্রযোজক তথা অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের বাবা মহেশ ভাট। এরপর সাগুফতা যোগ দেন মহেশ ভাটের প্রযোজনা সংস্থায়। তার নিজের জীবনে ঘটে চলা ঘটনা নিয়েই লেখেন প্রথম চিত্রনাট্য।
এরপর ১১টি সিনেমার চিত্রনাট্য লেখেন সাগুফতা। সেই তালিকায় আছে জান্নাত টু, রাজ থ্রি, আশিকি টু, সড়ক টু প্রভৃতি। সবগুলোই মহেশ ভাটের পরিচালিত ও প্রযোজিত সিনেমা। এছাড়া একটি তেলেগু সিনেমার চিত্রনাট্যও লেখেন তিনি। পাশাপাশি একাধিক টিভি সিরিয়ালের চিত্রনাট্যও লিখেছেন।
নিষিদ্ধ পল্লী থেকে উঠে আসা সংগ্রামী এই নারী একটি সিনেমা পরিচালনাও করেছেন। তবে সেটি বলিউডের নয়, টলিউডের। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মিমি চক্রবর্তী ও যশ অভিনীত ‘মন জানে না’ সিনেমাটির পরিচালক তিনি। আজ ৫৮ বছর বয়সে এসে সাগুফতা প্রতিষ্ঠিত। এক নামে তাকে চেনে ভারতের সবাই।
(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এজে)

মন্তব্য করুন