‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা করবে বিএনপি’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শুক্রবার রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, বিএনপি যেদিন ক্ষমতায় আসবে সেদিন যারা এদেশের জন্য জীবনের মূল্য ত্যাগ করে প্রাণ দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন তাদের তালিকা প্রণয়ন করবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে প্রতিটি এলাকায় স্তম্ভের মধ্যে তাদের নাম লেখা হবে।’
খসরু বলেন, ‘যে কারণে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল তা আজ অনুপস্থিত। ১৯৭১ সালে যে কারণে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, আজকের বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকারসহ, আইনের শাসন, সামাজিক নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার সবকিছু অনুপস্থিত। আমার আপনার বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আপনাকে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে। সেই মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যিনি জেলে বসে আছেন জেলে বসেও তাদের (সরকারের) ভয় শেষ হচ্ছে না।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রতিটা মানুষ, যারা জীবন দিয়েছেন আমরা প্রতিটি মানুষের নাম জানতে চাই। এই সম্পূর্ণ তালিকা দেশের মানুষ, এলাকার মানুষ জানতে চায়।’
খসরু বলেন, ‘যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের তালিকা প্রকাশ করতে বলার কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এজন্য আমরা তালিকা প্রকাশ করবো সরকার যদি না করে বিএনপি সেটা করবে। তারা এই তালিকা প্রকাশ না করার পেছনে কারণটা কি সেটাও কিন্তু স্পষ্ট ভাবে বলছে না। আমরা জানতে চাই তারা যদি এটা করতে না চায় তাহলে দেশবাসীকে বল আমরা এটা করব না এবং কী কী কারণে প্রকাশ করবেন না সেটা দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার করা হোক। কিন্তু বিএনপি অবশ্যই দেশের জনগণের কাছে এই তালিকা প্রকাশ করবে।’
আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কাউন্সিল মানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দলের মধ্যে থাকতে হবে, দেশের মধ্যে থাকতে হবে। আপনি বাংলাদেশের মানুষের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে দলের কাউন্সিল করছেন, সমস্ত মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করে দলের কাউন্সিল করছেন। আমি আশা করি তারা আজকের কাউন্সিলে এ দেশের গণতন্ত্র কীভাবে ফিরে আসবে, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কীভাবে ফিরে আসবে সেসব বিষয়ে ঘোষণা করবে।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'আজকে তারা (আ.লীগ) সম্মেলন করছে। আওয়ামী লীগ তাদের দলের কাউন্সিল করবে, আমরা তাদের দল হিসেবে স্বাগত জানাই। কিন্তু কিসের জন্য কাউন্সিল? কার কাউন্সিল যেখানে বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতা দখল করে জনগনকে বাইরে রেখে অব্যাহতভাবে দেশবিরোধী গণবিরোধী সব কাজ করে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের টাকা লুটপাট করে দিনের পর দিন ক্ষমতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেখানে একটি দল কাউন্সিল করছে তাদের।’
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা ড.কাজী মনিরুজ্জামান মনির সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/বিইউ/জেবি)

মন্তব্য করুন