৩০ বছরে পোকা কমেছে ২৫ শতাংশ, বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ

আবুল কাশেম, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১২:০৮| আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১২:১১
অ- অ+

করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দি বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ। কয়েকশ কোটি মানুষ ঘরবন্দি হওয়ার কারণে এবং কল-কারখানা, জাহাজ-বিমান বন্ধ থাকার কারণে প্রকৃতির বিষয়ে বিভিন্ন সুসংবাদ আমরা শুনছি। তবে এমন কিছু খারাপ খবরও রয়েছে যেগুলো মানুষ ঘরবন্দি থাকা অবস্থায়ও প্রকৃতিতে পূরণ হওয়া সম্ভব নয়।

পোকামাকড়ের সংখ্যা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি এবং সর্বকালের সবচয়ে বড় গবেষণায় দেখা গেছে যে, ১৯৯০ সালের পর থেকে ৩০ বছরে পোকামাকড়ের সংখ্যা ২৫ শতাংশ কমে গেছে। ইউরোপে পোকামাকড় হ্রাসের হার এখনো অব্যাহত রয়েছে। গবেষণার এই ফলে হতবাক বিজ্ঞানীরা।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্নাল সায়েন্সে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ১৬৬টি দীর্ঘমেয়াদি জরিপ ও ১ হাজার ৭০০ স্থানের তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে কয়েকটি প্রজাতির পোকার খুব অল্প সংখ্যক পৃথিবীতে বেঁচে রয়েছে।

গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রকৃতিতে পোকামাকড়ের যে অল্প সংখক অংশ রয়েছে, তা বিশেষত দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং আফ্রিকাতে। তারা জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে বন্যজীবের আবাসস্থল ধ্বংস পোকা জনসংখ্যার হ্রাসের একটি সম্ভাব্য কারণ।

বিশ্বে মানুষের চেয়ে ১৭ গুণ বেশি ওজনের পোকামাকড় রয়েছে। এই সংখ্যা প্রচুর। তারা বিশ্বের প্রকৃতি ঠিক রাখতে এবং মানব সভ্যতায় বড় অবদান রাখে। গাছপালার পরাগকরণ, অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য ও প্রকৃতির বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের জন্য বড় অবদান রাখে।

আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছিল যে, পোকামাকড়ের সংখ্যার হ্রাসের হার যদি সময়মতো কমানো না যায় তাহলে এটি মানবজাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।

লাইপজিগের জার্মান সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটিভ বায়োডাইভারসিটি রিসার্চের মূল্যায়নের প্রধান গবেষক রোল ভ্যান ক্লিঙ্ক বলেছেন, 'এই ২৪ শতাংশ অবশ্যই উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো বিষয়। আমি যখন ছোট ছিলাম তখনকার চেয়ে এখন পোকামাকড়ের সংখ্যা এক চতুর্থাংশ কম। মানুষদের একটি জিনিস সর্বদা স্মরণ করা উচিত তা হলো আমরা খাদ্যের জন্য পোকামাকড়ের ওপর নির্ভরশীল।

গবেষণায় অধ্যয়ন করা হয়েছিল যে সময়ের সঙ্গে কীভাবে ক্ষতির হার পরিবর্তন হচ্ছে। ভ্যান ক্লিঙ্ক যোগ করেন, 'ইউরোপ এখন খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে- এটি মারাত্মক এবং মর্মস্পর্শী। তবে এটি কেন হচ্ছে, আমরা জানি না।'

তিনি আরও বলেন, 'তবে আমরা আমাদের ফলাফল থেকে জানি যে শহরের সম্প্রসারণ পোকামাকড়ের জন্য খারাপ পরিণতি ডেকে আনছে। এটি পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকাতে দ্রুত হারে ঘটছে। দক্ষিণ আমেরিকায় অ্যামাজনের ধ্বংস হয়েছে। পোকামাকড় এবং সেখানে অন্যান্য সমস্ত প্রাণীর পক্ষে এটি খারাপ।'

জলবায়ু পরিবর্তন আরেকটি কারণ যা পোকামাকড়ের সংখ্যা হ্রাসের জন্য দায়ী হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আবাস ধ্বংস এবং কীটনাশকের মতো স্পষ্টতাকে বাদ দিয়ে ক্লিঙ্ক যোগ করেছেন যে, তাপ এবং বৃষ্টির পরিবর্তনের ফলে কিছু প্রজাতির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে ভ্যান ক্লিঙ্ক পোকামাকড়ের সংখ্যা হ্রাস চিন্তিত হওয়ার পাশাপাশি এখনো আশাবাদী। তিনি বলেন, এখনো এই ঘটনা থেকে কাটিয়ে ওঠার সময় রয়েছে। যদি সঠিক আইন প্রয়োগ করা হয় তবে এই সংখ্যা বিপরীতমুখী হতে শুরু করবে।

ঢাকা টাইমস/৩০এপ্রিল/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এবার গরমে মৃত্যু হয়নি কোনো হাজির : সৌদি আরব
চট্টগ্রাম-সিলেট বিভাগে আগামী চার দিন বৃষ্টি ঝরবে
কারাগারে ঈদ অনুষ্ঠানের মঞ্চ মাতালেন ‘বন্দি’ কণ্ঠশিল্পী নোবেল
রাজধানীতে আজ রাতের মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ অপসারণ: আসিফ মাহমুদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা