পদ্যে বাংলার পাখি

১। দোয়েল
কালো-সাদা দোয়েল পাখির নাম ‘জাতীয় পাখি’,
সেই পাখিটার গানের সংগে প্রাণের মাখামাখি।
শীতে থাকে চুপটি করে ডাকে গরমকালে,
মিষ্টি সুরে শিসটি দিয়ে ডালিম-লেবুর ডালে।
করতে পারে অনুকরণ অন্য পাখির সুর,
গাইতে পারে গান সুরেলা মিষ্টি সুমধুর।
লেজ দুলিয়ে দোয়েল পাখি শসার মাচায় নাচে,
এদেশ ছাড়া এমন পাখি কোন দেশেতে আছে?
২। টুনটুনি
টুনটুনি এক দুষ্টু পাখি ছোট্ট পাখির দলে,
টুইট-টুইট মিষ্টি মধুর গান থাকে তার গলে।
চালাক চতুর এই পাখিরা চঞ্চলতায় নাচে,
এর চালাকির মজার কতো গল্প-ছড়া আছে।
বাড়ি ঘরের ধারে কাছেই থাকতে তারা চায়,
লাফায় শুধু এ ডাল ও ডাল সবুজ বাগিচায়।
৩। ময়না
শখের পাখি, পোষা পাখি ময়না সবার প্রিয়,
ময়না যদি কয়না কথা গয়না গড়ে দিও।
ময়না পাখির সয়না কভু চুপটি করে থাকা,
অন্তবিহীন সুরের আবেশ তার গলাতে মাখা।
ময়না যদি কারোর কথা খানিক শোনে কানে,
সেই কথা সে বলতে পারে শিসটি দিয়ে গানে।
৪। টিয়ে
সবুজ রঙের টিয়ে পাখির টুকটুকে লাল ঠোঁট,
ফলফলাদি খেয়ে বনে বেড়ায় বেঁধে জোট।
দল বেঁধে সব টিয়ে পাখি ধানের ক্ষেতে জোটে,
পাকা ধানের শীষ কেটে নেয় শক্ত-ধারাল ঠোঁটে।
ঝাঁক বেঁধে সব কাটে তারা ধানের শীষের বোঁটা,
খাওয়ার চেয়ে আনন্দ তার ধানের সোনা লোটা।
৫। কোকিল
বসন্ত-দূত কোকিল ডাকে বসন্তকাল এলে,
কুহূ কুহূ মিষ্টি সুরে সুরের খেলা খেলে।
গান শুরু হয় উদারাতে অতি ধীর লয়ে,
ধীরে ধীরে তারায় চড়ে কুহূও ধারা বয়ে।
কুহূ কুহূ কুহূ সুরে উদাস করে মন,
দশদিশিতে ছড়িয়ে পড়ে সুরের আলাপন।
কুলীন পাখি কোকিল পা তার মাটিতে না ফেলে,
পাতার ফাঁকে গান করে সে গাছের ডালে খেলে।
অলল কোকিল চালাক পাখি বাসা বাঁধেনা সে,
কাকের বাসায় ডিম পেড়ে যায় বাচ্চা পাবার আশে।
কদর যে তার মধুর গানে স্বভাবটা নয় খাঁটি,
সুরটা যদি বেসুর হত; জীবন হতো মাটি।
৬। বুলবুলি
গানের পাখি বুলবুলিদের মন-মাতানো পাখা,
লেজের নীচে লালচে নীলের রঙ রয়েছে মাখা।
বুলবুলিদের মাথায় দেখে কালো রঙের ঝুঁটি,
আনন্দেতে খোকা খুকু খায় যে লুটোপুটি।
অন্য পাখির সংগে যেনো গায় যে একই সুরে,
বুলবুলিদের গান গেয়ে যায় সারা বেলা জুড়ে।
৭। মাছরাঙা
নীল-খয়েরি-লাল পালকের সেই পাখি কি চেনো?
মাছ-শিকারি মাছরাঙা সে, রঙের বাহার যেনো।
খালের বিলের পুকুর পাড়ের হেলে-পড়া ডালে,
চুপটি করে বসে থাকে মাছ শিকারের তালে।
দেখলো যখন পানির ওপর মাছ চলেছে ছুটে,
ছোঁ মেরে তা আটকে ফেলে শক্ত ধারাল ঠোঁটে।
মাছটি ঠোঁটে নিয়ে আবার ডালেই আসে ফিরে,
তৃপ্তি নিয়ে মাছটাকে সে খায় যে ধীরে ধীরে।

মন্তব্য করুন