কবিতা
আমার বাবা

কাদামাটিতে পা ডুবিয়ে,
ছুটে যেতাম মাঠের ধারে,
সূর্য ওঠা সোনালি সকালে—
হাসি ঝরত পুকুরপারে।
.
ভোরের কুয়াশা ঠেলে তুমি
হেঁটেছিলে নীরব ভারে,
ঘামের ছিটে ছিল তোমার—
ভবিষ্যতের সোনার জারে।
.
বুকের ভেতর সাহস ভরা,
তুমি ছিলে নির্ভরতার ছায়া,
ঝড়জলে ভাঙা ঘরেও—
তুমি ছিলে মমতার মায়া।
.
ধুলোমাখা সেই সবুজ গায়ে,
তোমার পায়ে ক্লান্তি টানা,
তবু তুমি যুদ্ধ করে গেছ সদা,
রাতে-দিনে না ছিল বাহানা।
.
পিঠে তুলে চলতে শিখিয়েছ,
ভেঙে দিয়েছ ভয়ের বেড়া,
তোমার ভালোবাসার ঢেউয়ে
আমার জীবন রঙে ঘেরা।
.
শূন্য পকেট, নিঃস্ব হাতে,
তবু ছিল ভরপুর মন,
তোমার হাসি—এক ফোঁটা আলো,
আমার ছিল রাজ্যের ধন।
.
শিখিয়েছ সদা—ঘামে ফলে ধন,
পরিশ্রমে ফুটে জীবনের গান,
তোমার ত্যাগে, নিষ্ঠায় গড়া—
আমার পরিচয়, আমার মান।
.
বৃষ্টিভেজা সেই সন্ধ্যাবেলায়
তুমি ছিলে আশ্রয়ের শক্ত ছাতা,
কর্দমপথে দুঃখ পেরিয়ে—
তুমিই ছিলে সাহসের খাতা।
.
তুমি নেই আজ দৃশ্যপটে,
তবু আছো সদা হৃদয়ের ঘরে,
তোমার স্বপ্ন আঁকড়ে রেখে
চলি আমি জীবন ভরে।
.
তুমি ছিলে আমার মাটির মুকুট,
তুমি ছিলে আলো, আশ্বাস, দীপ্তি,
তোমার নামে গাঁথি জীবন—
তুমিই আমার নিত্যদিনের তৃপ্তি।

মন্তব্য করুন