গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আরও ৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হতাহতদের অনেকেই ক্ষুধার তাড়নায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
রবিবার (১৫ জুন) মধ্য গাজার আল-আওদা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, নেটজারিম করিডোরের কাছে একটি সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে তিনজন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। এছাড়া দক্ষিণ গাজায় একইভাবে সহায়তা নিতে গিয়ে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের অনেককে রাফাহের রেড ক্রস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন খাবার সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন।
গাজার দেইর আল-বালাহ শহর থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আযুম বলেন, “ক্ষুধার্ত জনতাকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালানোর আগে কোনো সতর্কতা দেয়নি।” এক প্রত্যক্ষদর্শী আহমেদ আল-মাসরি একে ‘একটি পরিকল্পিত ফাঁদ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এছাড়া রবিবার দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়ায় বেসামরিক জনগণের ওপর চালানো হামলায় আরও সাতজন নিহত হন। মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরেও একাধিক হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা।
চিকিৎসক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গাজার পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণরূপে মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে মানুষ মরিয়া হয়ে পড়েছে, যার সুযোগ নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েলের এই হামলাগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে এবং এসব ঘটনাকে ‘মানব কসাইখানা’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। প্রতিদিনই গুলিবর্ষণ ও বোমা হামলায় নিহত হচ্ছেন অসহায় ফিলিস্তিনিরা।
গাজার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
(ঢাকাটাইমস/১৬ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন