যশোরে পাশবিকতার শিকার সেই শিশুর পাশে তারেক রহমান

যশোরের চৌগাছা উপজেলায় গত কয়েক দিন আগে ৭ বছরের পাশবিক নির্যাতনের শিকার সেই শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ঘটনা জানার পর মানবিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিশুটির খোঁজখবর নিতে নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দেন।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে শিশুটির চিকিৎসার অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের জন্য যশোরে এসেছেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও নারী ও শিশু নির্যাতন সহায়তা সেলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ডা. রফিকুল ইসলাম।
তিনি সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে সঙ্গে নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে আসেন।
হাসপাতালে তারা চিকিৎসকদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং শিশুটির চিকিৎসার অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। পাশাপাশি নির্যাতিত শিশুটির মায়ের সঙ্গেও কথা বলেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বিশেষ সেল গঠন করে নিপীড়িত নারী ও শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানান এবং সেলের প্রতিনিধিদের অবদানকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
স্বাস্থ্য সহায়তা সেলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ২০২৪ সালের শেষ চার মাসের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ১ হাজার ২১৮টি বেড়েছে। এই পরিসংখ্যান আশঙ্কাজনক। বিষয়টি উপলব্ধি করেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত মার্চ মাসে নিপীড়িত নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য ও আইনি সহায়তা সেল গঠন করেন।
তিনি বলেন, এই সেলের মাধ্যমে দেশে আলোচিত আছিয়া কাণ্ডসহ বিভিন্ন ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার আইনি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। খুলনা, যশোরসহ প্রতিটি জেলা ও বিভাগীয় সাংগঠনিক ইউনিটের মাধ্যমে নিপীড়িত নারী ও শিশুদের পাশে দাঁড়াতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোট দেওয়ার অপরাধে চার সন্তানের জননীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা এখনো দেশবাসীর স্মরণে রয়েছে। তখনও বিএনপি একইভাবে নির্যাতিতার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারপ্রক্রিয়ার ধীরগতির বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা এক লক্ষাধিক। এই দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে বিএনপির আইনি সহায়তা সেল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
শিশুটির চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য যশোর সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতে শিশুটির শারীরিক বা মানসিক উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তা নিশ্চিত করা হবে আমাদের স্বাস্থ্য সহায়তা সেলের পক্ষ থেকে।
এসময় শিশুটির মা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি—মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, স্বাস্থ্য ও আইনি সহায়তা সেলের সদস্যবৃন্দ, হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
(ঢাকা টাইমস/১৬জুন/এসএ)

মন্তব্য করুন