পদ্মা-মেঘনায় জাটকা সংরক্ষণ অভিযানের জন্য জ্বালানি বরাদ্দ অপ্রতুল

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০২৫, ২১:০৫
অ- অ+

ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার প্রতিবছর প্রজনন নিশ্চিত জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। সরকারের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে জেলা উপজেলা টাস্কফোর্স। এর মধ্যে দিন রাতে অভয়াশ্রম এলাকায় নিয়মিত টহলে থাকে নৌ পুলিশ। কিন্তু নৌপুলিশকে জাটকা সংরক্ষণে দায়িত্ব পালনে যে জ্বালানি বরাদ্দ দেয়া হয়, তা খুবই অপ্রতুল।

নৌ পুলিশ ও বাণিজ্যিকভাবে নৌযান পরিচালনাকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেল জ্বালানির খরচের প্রকৃত চিত্র। অভিযান পরিচালনায় জ্বালানি বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন মনে করে মৎস্য বিভাগ।

জানা গেছে, দেশের ৫টি অভয়াশ্র এলাকায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকার বিচরণ বেশি থাকে। এই সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, মজুদ, পরিবহন ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকে। আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে জেলা উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড নৌ পুলিশ।

চাঁদপুরে নৌ পুলিশের একটি থানাসহ ৬টি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। এসব ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা নৌযান দিয়ে মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে টহল দেয়। িএ জন্য তাদের যে জ্বালানি তেল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তাতে ভাড়া কিংবা নৌ পুলিশের নিজস্ব স্পিডবোট চালু করলেই জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মোলহেডে বাণিজ্যিকভাবে স্পিডবোট ভাড়ায় পরিচালনা করেন বেশ কয়েকজন। তার মধ্যে আব্দুর রহিম বলেন, ২০০ সিসি একটি বোট প্রতি ঘণ্টায় ৬০ লিটার জ্বালানি এবং দুটি ইঞ্জিন ওয়েল লাগে। আর যাত্রী বেশি হলে আরো বেশি খরচ হয়।

একই কথা জানান আলমগীর হোসেন নামের আরেক স্পিডবোট চালক। তিনি বলেন, তার ৭৫ সিসি স্পিডবোট প্রতি ঘণ্টায় জ্বালানি খরচ হয় ৪০ লিটার এবং ইঞ্জিন ওয়েল খরচ হয় থেকে দেড় লিটার। নৌ পুলিশ জানায়, চাঁদপুর নৌ থানায় একটি স্পিড বোট থাকলেও সেটি অকেজো। যে কারণে দিন রাতে তাদের দুটি করে চারটি স্পিড বোট ভাড়া নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। প্রতি ঘণ্টায় ন্যূনতম একটি স্পিড বোট পরিচালনায় ৪০-৬০ লিটার জ্বালানি লাগে। আর তাদের জন্য প্রতিদিনের গড় বরাদ্দ হলো থেকে ১০ লিটার। তাও আবার ইঞ্জিন ওয়েল ছাড়া।

চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এস এম ইকবাল বলেন, ‘নদীতে টহলের জন্য আমাদের মাসিক বরাদ্দ থাকে। তবে অভিযান পরিচালনার জন্য বাড়তি বরাদ্দ আসে। ওই বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। চলমান অভিযানে আমাদের থানা থেকে দুটি করে ৪টি টহল দল থাকে। তাদের অভিযান চলমান রাখার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ১৫০ লিটার জ্বালানির প্রয়োজন হয়।’

অভিযানের সময়ে জ্বালানি বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, অভয়াশ্রম এলাকায় সদরসহ ৯টি স্পিডবোট নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে একটি ২৩০ সিসি স্পিডবোটের প্রতিদিন প্রায় ২০০ লিটার জ্বালানি খরচ হয় এবং ৫০ ঘণ্টা পরপর ১০ লিটার ইঞ্জিন ওয়েল খরচ হয়। তবে অভিযান আরো সফল করার জন্য এই জ্বালানি বরাদ্দ লোকবল বাড়ানো যায় তাহলে টহল আরো বৃদ্ধি করা যাবে।

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, স্পিডবোট জ্বালানি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আমরা যদি সর্বনিম্ন ৭৫ সিসি স্পিডবোট দিয়ে ৩ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করি তাতেও কমপক্ষে ১৪০ লিটার জ্বালানির প্রয়োজন হয়। চলমান জাটকা সংরক্ষণ অভিযানে আমাদের যে পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন, তার তুলনায় বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। নৌ অঞ্চলের একটি থানা ১১টি ফাঁড়ির জন্য মাসিক বরাদ্দ হলো ৩ হাজার লিটার। এই বরাদ্দ দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

এসপি আরো বলেন, গত আগস্টের ঘটনায় চাঁদপুর নৌ থানা পুড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর কাজ চালানোর উপযোগী করা হলেও থানায় হাজতখানা প্রস্তুত হয়নি। এছাড়া অভিযানের সময় জেলা উপজেলা টাস্কফোর্সের অভিযানে আটক জেলেদের থানায় আদালতে আনা-নেয়ার জন্য পরিবহন সংকট রয়েছে। গণপরিবহনে আসামি নেয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকির আশঙ্কা থাকে।

(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চুরি যাওয়া একটি মোটরসাইকেল উদ্ধারে গিয়ে মিলল আরও চারটি, গ্রেপ্তার ৩
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কায়কোবাদ
পুরানা পল্টনের সাব্বির টাওয়ারে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ারের ৭ ইউনিট
যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারা ফ্যাসিবাদকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে : সালাম
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা