কবিতা
নির্বাক ধারা

কোনো ঘোষণা ছিল না, তবু—
আজ আকাশ খুলে দিয়েছে তার মন।
মেঘেরা যেন চিঠি লিখছে পুরোনো প্রেমিকাকে,
শহরের মাথায় ভিজে পড়ে
তাদের না-কহা কথা।
জানালার কাচে টুপটাপ শব্দ…
শব্দ নয়—এ যেন ধ্বনি হয়ে যাওয়া নীরবতা।
একটা দুপুর, যে দুপুরে তুমি বলেছিলে,
“তোমার সঙ্গে হেঁটে যেতে ইচ্ছে করে—
কোনো ছাতাহীন বৃষ্টিতে।”
বারান্দার কোণে জমে থাকা জলে,
একটা চিরকুট ভেসে ওঠে।
যেখানে লেখা নেই কিছু—
তবু প্রতিটা অক্ষর বুকের ভেতর বাজে,
তোমার চোখের মতো নীরব…
তোমার বিদায়ের মতো ভিজে।
শিশুরা রাস্তায় ছুটে, জল ছিটিয়ে হেসে ওঠে—
ওদের দেখে মনে পড়ে—
একটা দিন ছিল এমনই…
তুমি হেসেছিলে
আমার ছেঁড়া কবিতার উপরে,
বৃষ্টির ছাদে।
আর দূরে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে—
ভিজছে চুপচাপ,
হয়তো তার মধ্যেও জমে আছে কিছু না-পড়া চিঠি…
হয়তো সে আমিই।
বৃষ্টি এলে সময় থেমে যায়।
জীবন ধীরে চলে,
মানুষ আপন ছায়ায় ঢুকে পড়ে।
একটা ঘ্রাণ আসে…
মাটির মতো পরিচিত।
তুমি বলেছিলে—
“এ গন্ধে আমার শৈশব থাকে…”
আজও ছাদের কার্নিশ থেকে—
যখন ঝরে পড়ে নির্বাক ধারা,
আমি গুনে যাই সেই স্মৃতির পদচিহ্ন।
একেকটা ফোঁটা…
তোমার স্পর্শের মতো—
হালকা, গভীর,
চলে যাওয়া।
লেখক: ব্যাংকার ও উন্নয়ন গবেষক

মন্তব্য করুন