ইলন মাস্ক থেকে কেনা টেসলা গাড়ি বিক্রি করবেন ট্রাম্প!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। এক সময় ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব এতটাই চরমে উঠেছে যে, ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন ইলন মাস্ক থেকে কেনা নিজের টেসলা গাড়িটি বিক্রি করে দেবেন।
২০২৫ সালের মার্চে হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে টেসলার একটি মডেল এস গাড়ি ক্রয় করেন ট্রাম্প। সেই সময় ইলন মাস্কের নেতৃত্বে থাকা টেসলা ব্র্যান্ডের প্রচারণাতেও অংশ নেন তিনি। তখনই দুজনের মধ্যে সম্পর্কের দৃঢ়তা স্পষ্ট হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইলন মাস্ক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং সরকারি ব্যয় কমাতে তাকে একটি বিশেষ দপ্তরের দায়িত্বও দেওয়া হয়—“Department of Government Efficiency” নামে। কিন্তু এই দপ্তর থেকে মাস্কের প্রস্তাবিত ব্যয় সংকোচন নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। পাশাপাশি ট্রাম্পের কিছু বিতর্কিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মাস্ক প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাস্ক ট্রাম্পকে নিয়ে একের পর এক সমালোচনামূলক পোস্ট দিতে থাকেন। এমনকি তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একজন যৌন হয়রানিকারীর সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগও তোলেন, যা ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করে। জবাবে ট্রাম্পও মাস্ককে কটাক্ষ করে পাল্টা পোস্ট দেন এবং বলেন, “ইলন মাস্ককে নিয়ে আমি ভাবিই না।”
তবে এর মধ্যেই মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানায়, ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি নিজের টেসলা গাড়ি বিক্রি করবেন। এটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং এর মাধ্যমে মাস্কের ব্যবসায়িক স্বার্থকেও আঘাত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেক বাজার বিশ্লেষক।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর টেসলার শেয়ারে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। মাত্র একদিনেই কোম্পানিটির বাজারমূল্য ১১৫ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে। এর প্রভাব ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদেও পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে এমন পদক্ষেপ বাজারে অস্থিরতা তৈরি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে টেসলার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্ব এখন প্রযুক্তি ও রাজনীতির গণ্ডি পেরিয়ে অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতিই যে কিভাবে একটি বৃহৎ কোম্পানির ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করতে পারে, এটি তার বড় উদাহরণ। তবে আমেরিকান রাজনীতিতে এমন মোড় নতুন কিছু নয়—বন্ধুত্ব, স্বার্থ, এবং ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ এখানে যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/১০ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন