হামলা-ভাঙচুরের পর লুট: মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ
যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা-ভাঙচুরের পর সেখানকার মালামাল লুটপাটের ঘটনায় ৫০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলেজটির অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন। তিনি জানিয়েছেন, হামলার পর লুটপাটের ঘটনায় আজই মামলা করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা বলার মতো না। আমাদের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। এ বিষয়ে আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আজই মামলা করব।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এভাবে অতর্কিত হামলা কারোই কাম্য না। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রত্যেক ছাত্রদের নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করতে হবে। আমি প্রত্যেক ছাত্রদের অনুরোধ করবো কেউ যেন এ ধরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত না হয়।’
সাংবাদিকদের সামনে এদিন হামলার নেপথ্যের ঘটনা তুলে ধরেন ওবায়দুল্লাহ নয়ন। জানান, ‘অভিজিত হাওলাদার নামে এক শিক্ষার্থী মোল্লা কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পাস করেছে। সে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ন্যাশনাল মেডিকেলে ভর্তির দুদিন পরে মারা যায়।’
‘তবে আমাদের শিক্ষার্থীদের ধারণা, ভুল চিকিসায় অভিজিতের মৃত্যু হয়েছে। এজন্য শান্তিপ্রিয় সমাবেশ করতে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সামনে যায়। কিন্তু আমি আমাদের চার সদস্যবিশিষ্ট শিক্ষক প্রতিনিধি পাঠিয়ে সেখান থেকে ছাত্রদের নিয়ে আসি। আমরা ন্যাশনাল মেডিকেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে দ্রুত সমাধান দেওয়ার জন্য বলি। কিন্তু আমরা সেই সমাধান পাইনি।’
‘এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার আমাদের কলেজেরসহ ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে সেখানে তদন্তের বিস্তারিত জানতে যায়। এসময় সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের ছাত্ররা আমাদের এবং অন্যান্য কলেজের ছাত্রদের উপর আঘাত হানে, যার প্রেক্ষিতে ছাত্ররা গিয়ে সেখানে আক্রমণ করে। এরপর সোহরাওয়ার্দীর ছাত্ররা ‘সুপার মানডে’ নাম দিয়ে মোল্লা কলেজ উড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর কাল এ ঘটনা ঘটায়।’
অধ্যক্ষ ওবায়দুল্লাহ নয়ন দাবি করেন, ‘সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষের উসকানিতে এমন ঘটনা ঘটেছে।’
এদিকে, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে আজ কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে সোমবারের ঘটনায় কলেজ ও আশপাশের এলাকায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহসীন হুসাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না হয়, সেজন্য দুই প্লাটুন ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। পাশাপাশি সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে।’
সোমবার দুপুরে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা চালায়। এ সময় কলেজ ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এলএম/এজে)
মন্তব্য করুন