ফেনীতে এসএসসির ফরম পূরণে তিন গুণ টাকা আদায়
ফেনীতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কোচিং, সেশন চার্জ, দুই মাসের বাড়তি বেতন, মিলাদ, স্কাউট ও বিবিধ খাতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনগুণ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় এক হাজার ৭৬০ টাকা, বিজ্ঞান বিভাগে এক হাজার ৮৬০টাকা ধার্য করে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। কিছু প্রতিষ্ঠান এ নির্দেশ মানলেও বেশিরভাগই তা মানছে না। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত ফির তিনগুণ বেশি আদায় করছে।
শহরের প্রাণকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও অভিন্ন চিত্র। ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুল, ফেনী মডেল হাই স্কুল, রামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁড়িপুর উচ্চ বিদ্যালয়, জি,এ একাডেমী, শহীদ মেজর সালাউদ্দিন বীর উত্তম উচ্চ বিদ্যালয়, শহরতলীর পাঁচগাছিয়া এ জেড খাঁন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে আদায় করা হচ্ছে চার হাজার ৪০০ টাকা থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এই টাকার জন্য কোনো রসিদও দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক কোচিং ফি আদায়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। গ্রামাঞ্চলের কিছু প্রতিষ্ঠান ফরম ফির সঙ্গে কোচিং ফি টাকাও কৌশলে আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়া সদর উপজেলার কালিদহ এসসি লাহা উচ্চ বিদ্যালয়, লস্করহাট এসসি লাহা ইনস্টিটিউশন, সোনাগাজীর বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দাগনভূঞার সুজাতপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুমোদন না থাকায় কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে হলি ক্রিসেন্ট ইনস্টিটিউট, ফেনী কলেজিয়েট স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা আদায় করছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা শহরের মডেল হাই স্কুলের নামে পরীক্ষায় অংশ নেবে।
শনিবার ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলে বাণিজ্য বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ফরম পূরণের টাকা জমা দেন তার অভিভাবক। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষিকা কামরুন নাহার তার কাছ থেকে চার হাজার ৯০০ টাকা নিয়েছেন। তবে ওই টাকার কোনো রশিদ দেননি। ওই অভিভাবক আরো জানান, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ নেয়া হচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেনী সেন্ট্রাল হাই স্কুলের এক শিক্ষক জানান, কোচিং ফি ছাড়া ফরম পুরণের জন্য তিন হাজার টাকা নেয়া হচ্ছে।
ফেনী মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, ফরম পুরণের সঙ্গে কোচিং ফি আদায় করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল হাসেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি জানান, এটা স্কুলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল আমিন বলেন, ‘বোর্ডের নির্ধারিত টাকার বেশি নেয়ার কোনো সুযোগ নাই।’
জানতে চাইলে জেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মালেক চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/প্রতিনিধি/জেডএ)
মন্তব্য করুন