গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাত বছরেও হলো না অস্ত্রোপচার কক্ষ
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবনের আধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষটি সাত বছরে চালু করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্রোপচার সরঞ্জামের ঘাটতি ও জনবল সংকটই এর মূল কারণ বলে জানা গেছে। এতে বেসরকারি ক্লিনিকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে সেবা নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে নবনির্মিত ৫০ শয্যার উন্নীত হাসপাতালটিতে আধুনিক একটি অস্ত্রোপচার কক্ষ থাকলেও শল্য চিকিৎসক ও অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ) ও সরঞ্জাম বাক্সবন্দী থাকায় অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে।
এদিকে যন্ত্র অকেজো থাকায় বছর খানেক সময় ধরে এক্সরে ও ইসিজি সেবা দেয়া যাচ্ছে না। আলট্রাসোনোগ্রাম করার যন্ত্রও নেই।
এখানে শুধু স্বাভাবিক প্রসব করানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, গত দুই মাসে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন ও বদলিজনিত কারণে ১৫ জন চিকিৎসক চলে গেছেন। অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম ও চিকিৎসক স্বল্পতার কথা ঊর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। কিছু সরঞ্জাম বাক্সবন্দী হয়ে পড়ে আছে।
এদিকে হাসপাতালটিতে অস্ত্রোপচার সুবিধা না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশনসহ প্রাথমিক অস্ত্রোপচার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার সেবা প্রার্থী মানুষ।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, বহির্বিভাগে গড়ে প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিনশ রোগী চিকিৎসা নেয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচর বাস স্ট্যান্ডের এক কিলোমিটারের মধ্যেই হাসপাতালটির অবস্থান হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার মানুষ এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন।
গত শুক্রবার উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে ত্রুটিপূর্ণ অ্যাম্বুলেন্সে মহাসড়কের যানজট মোকাবিলা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, উপজেলা হাসপাতালটি অপারেশন সুবিধা থাকলে হয়তো রফিক বেঁচে যেতেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পূর্ব পাশের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষা বাড়ির বাসিন্দা সুমাইয়ার সাথে কথা হয়। স্থানীয় একটি ক্লিনিকে তিনি সিজারিয়ান অপারেশন করে মা হয়েছেন গত সোমবার। তার স্বামী সরফুদ্দিন জানান, ১৪ হাজার টাকার চুক্তিতে সিজারিয়ান করে তিনি বাবা হলেন। অথচ সুমাইয়াদের শোবার ঘর লাগোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর।
মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি সদ্য এই জেলায় যোগদান করেছি। আমি সমস্যার বিষয়গুলো অবগত রয়েছি। স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করছি।
(ঢাকাটাইমস/১৫ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন