ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে লিচু উৎপাদনে ধস
গত কয়েক বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লিচু চাষ হচ্ছে। এতদিন লাভজনক হওয়ায় চাষের আওতা বেড়েছে প্রতি বছর। কিন্তু চলতি বছর হঠাৎ করেই চাষির মাথায় হাত। উৎপাদন এবার কমে গেছে অস্বাভাবিক হারে।
এমনিতে বিজয়নগরে প্রতিবছর ১০ থোক ১৫ কোটি টাকার লিচু বেচা কেনা হয়। এবার চাষের আওতা বাড়ায় আরও বেশি বিক্রির আশা করছিল বাগান মালিকরা। কিন্তু এবার সে আশা গুড়েবালি। বাগান মালিক ফরিদ উদ্দিন ভুইয়া বলেন, এ বছর উৎপাদন কম হয়েছে। যে বাগানে গত বছর লাখ টাকার লিচু গত বছর বিক্রি হয়েছে, সে বাগান থেকে এ বছর খাবারের জন্য লিচু ও পাওয়া যাচ্ছে না।
উপজেলার আওলিয়া বাজারে প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে অর্ধকোটি টাকার লিচু পাইকারি বিক্রি হত। কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত হত এখানকার লিচু। কিন্তু এ বছর বৈরী আবহাওয়ায় উৎপাদনে ধস নেমেছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ফলন কম হওয়ায় এবার চাষিদেও কয়েক কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আশির দশকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে লিচু চাষ শুরু হয়। চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৫০ হেক্টর এক হাজার ২৫০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যার বাজারমূল্য অন্তত ৩০ কোটি টাকা।
এখানে উৎপাদিত লিচুর মধ্যে বোম্বাই, পাটনাই ও চায়না থ্রি উল্লেখযোগ্য। চারা রোপনের ৩/৪ বছর পরেই গাছে ফল আসে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত শীত পড়ায় এবং পওে অসময়ের ভারী বৃষ্টিতে গাছের ফুল ঝরে যায়। এতে লিচু চাষ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে শত শত লিচু চাষি মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতির কবলে পড়েছে।
একজন চাষি জানান, তার কোন বাগানে তেমন লিচু আসেনি। দেশি জাতের গাছে কিছু লিচু আসলেও বোম্বাই জাতের গাছে কোন লিচু আসেনি।
চাষি কবির হোসেন বলেন, অতিরিক্ত শীত ও বৃষ্টিতে লিচুর ফুল ঝরে যায়। গাছে অনেক লিচুই আসেনি আবার আসলেও ঝরে গেছে।আরেক চাষি মাহবতাব বলেন, বোম্বাই ওপাটনা জাতের লিচু বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশি জাতের গাছে কিছু লিচু এসেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুল আলম বলেন, এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহনশীল জাত উদ্ভাবন করার জন্য কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে পরামর্শ দিয়েছি আমরা।
ঢাকাটাইমস/২১মে/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি
মন্তব্য করুন