প্রসাধনী থেকেও হয় শ্বেতী
দাদির সঙ্গে এক বালিশে ঘুমায় ছোট্ট সুমনা। হঠাৎই একদিন তার গায়ে সাদা রঙের গোল গোল দাগ দেখা দিতে শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে কিছু বোঝা না গেলেও, পরে জানা যায় সুমনার দাদি চুলে রং ব্যবহার করেন। আর তা থেকে দাদির কিছু না হলেও, এক বালিশে শোওয়ার কারণে নাতনির ত্বকে ছড়িয়েছে শ্বেতী।
শুধু চুলের রং নয় চিকিৎসকেরা জানান, জামাকাপড় ধোওয়ার সাবান, ডিওডোরেন্ট থেকেও ছড়াতে পারে এই শ্বেতী। যাকে বলা হয় ‘কেমিক্যাল শ্বেতী’। সম্প্রতি সেই গবেষণাপত্রটি একটি আন্তর্জাতিক সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়।
চর্মরোগ চিকিৎসকরা জানালেন, শ্বেতী নানা প্রকারের হয়। তার একটি ধরন হল কেমিক্যাল শ্বেতী। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করলে এই রোগ ছড়াতে পারে। মূলত প্রসাধনী দ্রব্য থেকেই এটি হয়। এই শ্বেতী নির্মূল করা সম্ভব।
সাধারনত শিল্পাঞ্চলের কর্মীদের ত্বকে এক ধরনের কোষ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চর্মরোগ দেখা দেয়। যাকে চিকিৎসার ভাষায় কেমিক্যাল লিউকোডার্মা বলা হয়। শুধুমাত্র শিল্পাঞ্চলের রাসায়নিক থেকে নয়, নিত্য ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্য থেকে চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। তবে, এই রোগ আর কেমিক্যাল লিউকোডার্মা এক নয়। বিভিন্ন পণ্য থেকে ত্বক সাদা হয়ে যাওয়ার যে রোগ ধরা পড়ে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে সেটির নাম ‘কেমিক্যাল শ্বেতী’।
চিকিৎসকদের মতে, শ্বেতী কেন হয়, তা বুঝতে না পারার জেরে অনেক সময়ে সঠিক চিকিৎসা হয় না। পাশাপাশি, অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, শ্বেতী ছোঁয়াচে। শ্বেতী নিয়ে সচেতনতা প্রসার করতে পারলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। শ্বেতীর কারণ সঠিক বোঝা গেলে, তা নির্মূলও হতে পারে। যে সমস্ত সামগ্রী, অর্থাৎ সুগন্ধী, ডিটারজেন্ট, চুলের রং, ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করলে শ্বেতী হচ্ছে, সেই দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ করলেই রোগ ছ়ড়াবে না।
চিকিৎসকরা জানালেন, ‘রোগ নির্ণয়ের সময়ে রোগীর ইতিহাস ভাল করে জানা দরকার। তিনি কী কী জিনিস ব্যবহার করেন, সে ব্যাপারে নজর দিলে কেমিক্যাল শ্বেতী সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা প়ড়াটাও জরুরি। কারণ, যে দ্রব্যের জন্য ওই চর্মরোগ হচ্ছে, সেটি ক্রমাগত ব্যবহার করলে দেহের বিভিন্ন জায়গায় শ্বেতী ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে।’
(ঢাকাটাইমস/৩১মে/জেএস)
মন্তব্য করুন