হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন
বর্তমান ও সাবেক ভিসির (ভাইস চ্যাঞ্জেলর) অন্তঃদ্বন্দ্বে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। একদিকে দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, মানষিক নির্যাতন ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করার প্রতিবাদে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ। অন্যদিকে বিএসসি এগ্রিকালচার অ্যান্ড এগ্রিবিজনেস ডিগ্রির পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ বিএসসি ইন এগ্রিকালচার ডিগ্রি চালুর দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলন করতে গিয়ে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন তারা।
অভিযুক্ত সাবেক ভিসির বিরুদ্ধে সোমবারও আন্দোলন করছেন তারা। এতে ভেস্তে যাচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ছিল ভিসি শূন্য। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ভিসি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম পরবর্তী চার বছরের জন্য ভিসি নিযুক্ত হন। এদিকে দীর্ঘদিনের সাবেক ভিসি প্রফেসর রুহুল আমিন দায়িত্ব পান ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন হিসেবে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। কেউ বর্তমান ভিসি, আবার কেউ সাবেক ভিসির পক্ষ অবলম্বন করেন। এ নিয়ে প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে।
সম্প্রতি এরই প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের উপর। এমনি কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. বলরাম রায়। তিনি বলেন, বর্তমান ভিসি সবকিছু বিভাজন করে ফেলেছেন। তিনি শিক্ষকদের পেছনে শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্বাবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক দীপক কুমার সরকার দু’ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, মানষিক নির্যাতন ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করে। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৪ সেপ্টেম্বর দুটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ঘটনার সত্যতা পেয়ে রিপোর্ট পেশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রহণ করেনি কোন ব্যবস্থা।
এ ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক দীপক কুমার সরকার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা অস্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে কৃষি ও কৃষিবাণিজ্য ডিগ্রির পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ কৃষি সম্মান ডিগ্রি চালুর দাবিতে ফুঁসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। এই অনুষদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে সুযোগ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে এই ডিগ্রি বাতিল করে কৃষি সম্মান ডিগ্রি চালুর দাবি করে আসছে তারা। এরই জের ধরে সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন প্রফেসর রুহুল আমিনকে রবিবার অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এনিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহম্মদ আবুল কাসেম ৯ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেছেন। কিন্তু সাবেক ভিসি প্রফেসর রুহুল আমিন বলছেন, সব ঘটনা ঘটছে অদক্ষ প্রশাসনের কারণে। বর্তমান ভিসি সবকিছু বিভাজন করে রেখেছেন।
বিষয়টি নিয়ে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মু আবুল কাসেমের সঙ্গে যোগাযাগ করা হয়। তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/১২জুন/এসএএস/এলএ)
মন্তব্য করুন