খেলাপি ঋণ এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা
ব্যাংক থেকে নেয়া এক লাখ কোটি টাকারও বেশি ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এটি মোট ঋণের ১০ শতাংশেরও কিছু বেশি। তবে গত কয়েক মাসের চেষ্টায় বেশ কিছু ঋণ আদায় করা গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ থেকে গভর্নরের আশা খেলাপি ঋণ সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যাবে।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন গভর্নর।
গভর্নর বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পূর্বের যে নন পারফরমিং লোন রয়েছে সেটি এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।’
‘এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সচেতন। ইতোমধ্যেই পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আইন মেনে চলার জন্য ব্যাংকগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এগুলো ক্যাশ রিকভারি ব্যাপারে অনেক ইমপ্রেসিভ চালাচ্ছে বিভিন্ন ব্যাংক।’
নতুন করে দেয়া ঋণ যেন খেলাপি না হয়ে যায়, সে জন্য সতর্ক থাকার কথাও বলেন গভর্নর। বলেন, ‘আমরা লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোয়ালিটির উপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এটা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এখন যে ঋণ দেওয়া হবে সেটা গ্রাহকের পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি (কেওয়াইসি) সহ সব নিতিমালা মেনে দেওয়া হবে। যাতে ভবিষ্যতে কোনো সমস্য না হয়।’
এরপর ফজলে কবির বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী কাছে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে বলেন।
এস কে সুর চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আট লাখ হাজার কোটি টাকা বর্তমানে টোটাল ক্রেডিড। তার ভেতরে এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা সেই হিসেবে এটা এরাউন্ড ১০ শতাংশ। এটা আগে থেকেই ছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ, ২০১৫ সালে ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, ২০১৭ এ খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
খেলাপি ঋণ বাড়ার পেছনে বেশ কিছু যৌক্তিক কারণও রয়েছে বলে মনে করেন এস কে সুর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ সময়মত পণ্য রপ্তানি না হওয়া , গ্যাস-বিদুৎ সরবরাহে সংকট, অনেক সময় প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে, সময় মত পণ্য রপ্তানি না হওয়া, ব্যবসায়িক মন্দা, ক্ষেত্রবিশেষে ধর্মঘট, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি, ঋণ আদায়ে দীর্ঘসূত্রতা ইত্যাদি কারণে খেলাপি ঋণের হার যেভাবে আমরা কমাতে চেয়েছি সেভাবে পারিনি। তবে আমাদের অবিরাম প্রচেষ্টা আছে এ ব্যাপারে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের কতগুলো ধাপ পেরিয়ে ব্যবস্থা নিতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম নীতির সঙ্গে কোনো আপস করে না।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, প্রধান অর্থনীতিবিদ ফয়সাল আহমেদ, প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো. আখতারুজ্জামান প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/জেআর/ডব্লিউবি)