ঝিনাইদহে সাপের খেলা

সাপ! শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে ভয়ঙ্কর এক প্রাণীর ছবি। যার দংশনে মুহূর্তেই ঝরে যেতে পারে প্রাণ। তবে, সাপ যে সবসময় মানুষের প্রাণসংহার করে তা নয়। কখনো কখনো এই ভয়ংকর প্রাণীটি মানুষকে বিনোদন দিয়ে থাকে।
সাপের খেলা। যখন বড় পরিসরে আয়োজন করে অনুষ্ঠিত হয়, তখন তাকে আঞ্চলিক ভাষায় ‘ঝাপান খেলা’ বলে। হারিয়ে যাওয়া এই খেলা আবারো ফিরিয়ে আনতে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পারমথুরাপুর গ্রামের মাঠে আয়োজন করা হয় জাঁকজমকপূর্ণ এই প্রতিযোগিতার।
পারমথুরাপুর গ্রামের মাঠে এ খেলায় অংশ নেয় ১১টি সাপুড়ে দল। ঝাঁপান খেলা নিয়ে পুরো এলাকায় রূপ নেয় উৎসবের আমেজ। সাপুড়েদের বিভিন্ন কৌশল আর বাদ্যের তালে তালে ফনা তোলা সাপের কসরত দেখে, আনন্দে মেতে ওঠেন দর্শকরা। ভবিষ্যতেও এ আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবি তাদের।
বাদ্যের তালে তালে ঝুড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর গোখরো সাপ। আর তা দেখে আনন্দে নেচে ওঠেন শত শত দর্শক। তাদের করতালি একটুও বিচলিত করেনি ফণা তোলা এই নাচিয়েকে। মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধু মানুষকে আনন্দ দিলেই হবে, জিততে হবে মর্যাদার লড়াইয়ে।
অংশগ্রহণকারী সাপুড়ে আব্দুর রশিদ জানান, এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা। আমার আগে আমার বাবা তার আগে তার বাবা সকলেই সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারণ করতেন। আমরা বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াই। এ ধরনের আয়োজন হলে এলাকার সাপুড়েদের মিলন মেলায় অনেক ভাববিনিময় ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপের খোঁজ-খবর পাওয়া যায় বলে জানান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাপুড়েরা।
এ ব্যাপারে আয়োজক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন। কালের বিবর্তনে লোকাচারের অনেক কিছুই এখন হারিয়ে গেছে। কিন্তু ঝাপাং গানের কোনো হেরফের হয়নি। সেই মধ্যযুগ হয়ে একবিংশ শতাব্দীর মানুষের কাছে এখনো সমান জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে এটি।
(ঢাকাটাইমস/১৫ অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)

মন্তব্য করুন