যে কারণে কৃষক লীগে এগিয়ে মোতাহার ও রেজা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ১৭:৪৫| আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:১৫
অ- অ+
মোতাহার হোসেন মোল্লা ও খন্দকার শামসুল হক রেজা (ফাইল ছবি)

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ নভেম্বর। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কৃষকদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক, দক্ষ কৃষক সংগঠকদের কৃষক লীগের নেতৃত্বে রাখা হবে। তবে দলটির নেতারা জানিয়েছেন, দক্ষ সংগঠন ও তৃণমূলে শক্ত অবস্থান থাকায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা তেমনটা দেখছেন না তারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। দলীয় সভাপতি তাদের কৃষক লীগে যে কারণে দায়িত্ব দিয়েছেন সেই বিষয়টি তারা দক্ষতার সঙ্গে পালন করছেন। অন্য সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো ব্যবসার অভিযোগ থাকলেও কৃষক লীগের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে নাই। সাংগঠনিক দক্ষতা ও কোনো অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত না হওয়ায় শীর্ষ দুই পদে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।

কৃষক লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, বর্তমান কমিটি প্রায় সারাদেশে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সম্মেলন করে কমিটি দিয়েছে। কৃষকদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, জাতীয় দিবসগুলো সফলভাবে মোতাহার হোসেন মোল্লা ও খন্দকার শামসুল হক রেজার নেতৃত্বে পালন করা হয়েছে। তারা বলেন, মোতাহার মোল্লা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন ত্যাগী কর্মী। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। ওই সময় তিনি কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়ে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন। তিনি ছাত্রলীগের ওবায়দুল কাদের-বাহালুল মজনুন চুন্নু কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। ছাত্ররাজনীতি শেষে তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। ওই সময় তাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক হয়নি।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি কৃষক লীগের রাজনীতিতে জড়ান। পরে তাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর ২০১২ সালের সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি প্রথমভারের মতো সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন। সভাপতির দায়িত্ব তিনি সফলভাবেই করেন।

কৃষক লীগে রাজনীতি করার আগে তিনি গাজীপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জন্ম জাতীয় নেতা তাজউদ্দিনের। সবসময় তিনি শহীদ তাজউদ্দিনের পরিবারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করেছেন। তাজউদ্দিন পরিবারের প্রতি সন্মান দেখিয়ে তিনি কখনোই ওই আসন থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রত্যাশা করেননি তেমন। তার একমাত্র লক্ষ্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এবং তিনি তাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেগুলো পালন করা।

ব্যক্তিগত জীবনে মোতাহার মোল্লা সাদাসিধে, তেমন কোনো চাহিদা নেই। তবে বিশেষ একটি মহল নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক কৃষক লীগের একজন নেতা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠনকে আগামী দিনে আরও গতিশীল করতে মোতাহার হোসেনের মোল্লাকে আবারো প্রয়োজন। কৃষক লীগকে সুমৃদ্ধ করার পেছনেও তার ভূমিকা রয়েছে, আগামীতেও তার সেই সুযোগ রয়েছে। তাকে নিয়ে গুটিকয়েক ব্যক্তি নিজস্ব স্বার্থে বিভিন্ন জায়গায় যে সমালোচনা করছে তা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নলেজে রয়েছে। তার মতো গ্রহণযোগ্য নেতাকে আবারও সভাপতির পদে দেখতে চাই।’

কৃষক লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা। তিনি পটুয়াখালী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও প্রয়াত এমপি আব্দুল আজিজ খন্দকারের ছেলে। পেশায় আইনজীবী থন্দকার রেজা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১২ সালের সম্মেলনে তিনি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের সঙ্গে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল শামসুল হক রেজাকে। তিনি দলের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছিলেন। পরে অবশ্য চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয় আ স ম ফিরোজকে। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তাকে বিজয়ী করতে নিরলসভাবে কাজ করেন শামসুল হক রেজা।

কৃষক লীগের একজন নেতা বলেন, ‘শামসুল হক রেজাও তৃণমূলে খুবই জনপ্রিয় নেতা। সাদাসিধে থন্দকার রেজার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের সম্পর্ক অনেক ভালো। দুজনের সঙ্গে বোঝাপড়াও ভালো। বিভিন্ন সংগঠনের দেখা যেত সভাপতির একটা পক্ষ আর সাধারণ সম্পাদকের আরেকটা পক্ষ। কিন্তু আমাদের সংগঠনে এটা নেই। আগামী সম্মেলনে দুজন পুনরায় নির্বাচিত হলে সংগঠন আরও বেশি সুসংগঠিত হবে এই বিশ্বাস কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের।’

শামসুল হক রেজা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সব সময়ই কৃষকদের অধিকার আদায়ে লড়াই সংগ্রামে ছিলাম, এখনো আছি। আর ভবিষ্যতেও থাকবো।’

সভাপতি হিসেবে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ওমর ফারুক, সহ-সভাপতি শরীফ আশরাফ হোসেন, সহ-সভাপতি কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা ও সহ-সভাপতি শেখ জাহাঙ্গীর আলমের নামও আলোচনায় রয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু, কৃষিবিদ সাখাওয়াত হোসেন সুইট, আসাদুজ্জামান বিপ্লব, আবুল হোসেন ও গাজী জসিম উদ্দিনের নাম।

(ঢাকাটাইমস/২৯অক্টোবর/টিএ/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে খালেদা জিয়া কখনো আপস করেননি: কাদের গনি চৌধুরী 
সুনামগঞ্জে পিকআপের ধাক্কায় শিশু নিহত
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি ২১ মে শুরু
ঈদুল আজহায় ১০ দিন ছুটির সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা