গ্রাহকের ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ধামাকা শপিংয়ের এমডির বিলাসবহুল ভবন ক্রোক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২৫, ১৮:২২| আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, ১৮:২৯
অ- অ+

গ্রাহকের ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’-এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ— সিআইডি।

সম্প্রতি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের নির্দেশে এসব সম্পত্তি ক্রোক করা হয়। সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুনের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন এই আদেশ জারি করেন আদালত।

ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. এম. ডি. জসীম উদ্দিন চিশতীর নামে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনের ৩ ও ২/এ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর প্লটে অবস্থিত একটি বহুতল ভবন। পাঁচ কাঠা জমির ওপর নির্মিত এ ভবনের বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

এছাড়া 'মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড'–এর নামে গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় ৪১ শতাংশ জমিও ক্রোক করা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি টাকা।

তদন্তে জানা গেছে, ধামাকা শপিং নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি বৈধ কোনো নিবন্ধন ছাড়া ‘ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড’–এর ছত্রছায়ায় পরিচালিত হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

এমনকি ধামাকার কোনো নিজস্ব ব্যাংক হিসাব না থাকলেও ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম–এর সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হিসাব ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেন করা হতো।

সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সেখানে প্রায় ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, অথচ ২০২১ সালের ২৭ জুন ওই অ্যাকাউন্টে মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা ছিল—যা আর্থিক জালিয়াতির সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে।

সিআইডির অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে, আত্মসাৎকৃত অর্থ প্রতিষ্ঠানটির এমডি চিন্তীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। এমনকি ‘Micro Trade Food and Beverage’–এর অ্যাকাউন্টেও ওই অর্থ অবৈধভাবে স্থানান্তর হয়েছে, যা মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে।

এই ঘটনায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)/৪(৪) ধারায় রাজধানীর বনানী মডেল থানায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর একটি মামলা (মামলা নং: ১৩) দায়ের করা হয়।

সিআইডি জানায়, অভিযুক্তরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং তারা আত্মসাতকৃত অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছেন। পাচার হওয়া অর্থের উৎস, গন্তব্য ও ব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ দল, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর দিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন শফিকুল আলম
এসআই সুকান্তকে কারাগারে প্রেরণ 
চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর, আসছে ৩ দিনের ছুটি
দুদকের নজরে হাসনাতের অভিযোগ, হবে অনুসন্ধান: মহাপরিচালক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা