জাতির উদ্দেশে ভাষণে খামেনির হুঁশিয়ারি, আবার এলে বড় মূল্য দিতে হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২৫, ১৯:৫৩| আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, ২০:০৭
অ- অ+

যুদ্ধবিরতির দুই দিন পর জাতির সামনে এসে আবার শত্রুদের হুঁশিয়ারি করলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। তিনি বলেছেন, ইরান কখনো যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের চাপের কাছে নথি স্বীকার করবে না। ইরানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে যেকোনো আগ্রাসনের জন্য বিরাট মূল্য দিতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বাংলাদেশ সময় বিকেলে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

টানা ১২ দিনের সংঘাত শেষে গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) যুদ্ধবিরতি হয়। এরপর গত দুই দিন কোনো মাধ্যমে খামেনিকে পাওয়া যায়নি।

খামেনি বলেন, ‘আমাদের শত্রুরা ক্ষেপণাস্ত্র বা পারমাণবিক কর্মসূচিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু বাস্তবে তারা চায় ইরান আত্মসমর্পণ করুক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই বলেছেন ইরানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু আমাদের জাতি শক্তিশালী—আমরা কখনও মাথা নত করব না।’

ভাষণে ইরানকে শক্তিশালী জাতি হিসেবে বর্ণনা করে খামেনি বলেন, আত্মসমর্পণ শব্দটি ইরানের অভিধানে নেই৷ ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনে ইরানের জনগণ যে একাত্মতা দেখিয়েছে তা উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, জনগণই আমাদের কণ্ঠস্বর।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত চলাকালে গত রোববার ভোরে ইরানের প্রধান তিনটি পরমাণু স্থাপনায় অকস্মাৎ হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধে জড়ান ট্রাম্প। ইরানও ছেড়ে দেয়নি। পরদিন কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান।

মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা হামলা প্রসঙ্গে খামেনি বলেন,‌ এটি একটি দুর্দান্ত কাজ ছিল, যা ভবিষ্যতেও পুনরাবৃত্তি হতে পারে, যদি হুমকি অব্যাহত থাকে।

ইরানে মার্কিন হামলাকে ট্রাম্পের ‘শক্তি দেখানো’র একটি প্রচেষ্টা ছিল বলে মন্তব্য করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘তারা (ইরানের) পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হেনেছে, কিন্তু খুব বেশি কিছু অর্জন করতে পারেনি।’

গত ২২ জুন ভোররাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় বি-২ বোমারু বিমান থেকে বোমা ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। সাতটি বিমান থেকে প্রতিটি ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের অন্তত এক ডজন বোমা ফেলা হয় ফোরদোতে। অন্য দুটিতে ক্রুজ মিসাইল ছোড়া হয় যুদ্ধজাহাজ থেকে। হামলা সম্পূর্ণ সফল বলে দাবি করেন ট্রাম্প। কিন্তু পেন্টাগনের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয় এসব হামলায় খুব বড় ক্ষতি হয়নি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির। কর্মসূটি কিছুদিন পেছালো শুধু।

এবারের ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের শুরু গত ১৩ জুন রাতে। বিনা উসকানিতে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক এলাকায় হামলা চালায় ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে এই আকস্মিক অভিযানে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি, বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গোলাম আলি রশিদ এবং অন্তত ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ বেশ কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা প্রাণ হারান।

জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস–৩’ নামে পাল্টা হামলা চালায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে। একের পর এক ক্ষেণাস্ত্রের আঘাতে হতবিহ্বল হয়ে পড়ে ইসরায়েলিরা। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও। যুদ্ধে ইসরায়েলের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় তাদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বোমা ফেলে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায়। এরও কঠোর জবাব দেয় ইরান।

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর দিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন শফিকুল আলম
এসআই সুকান্তকে কারাগারে প্রেরণ 
চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর, আসছে ৩ দিনের ছুটি
দুদকের নজরে হাসনাতের অভিযোগ, হবে অনুসন্ধান: মহাপরিচালক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা