রকিব-হুদা-আউয়াল গণতন্ত্র ধ্বংসকারী, এদের বিচার হওয়া উচিত: রিজভী

২০১৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনের তৎকালীন সিইসি কে এম নুরুল হুদা এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল—এদের গণতন্ত্র ধ্বংসকারী আখ্যা দিয়ে আইনসম্মতভাবে বিচার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘মানুষ অপদস্থ হোক, তা আমরা চাই না। কারও অপরাধ থাকলে তার আইনসম্মত বিচার হবে, ন্যায্য বিচার হবে, সে যেন উপযুক্ত বিচার পায়। সাবেক সিইসি নুরুল হুদা, রকিব ও হাবিবুল আউয়াল দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে তছনছ করেছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতাকে স্থায়ী করার অপচেষ্টা করেছে। এজন্য শুধু ধিক্কার ও ঘৃণা নয়, এদের অবশ্যই বিচার হতে হবে—সেটা আইনসম্মতভাবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা যে পথ দেখিয়েছেন, আমরা সে পথে যাব না। আমরা যাব গণতন্ত্রের পথে, আইনের পথে। এজন্যই তো আমাদের ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম। আমরা আইন হাতে তুলে নেব না। কেন আমরা কাউকে ঢিল বা ডিম ছুড়ব, গলায় জুতার মালা পরাব? সে অন্য দলের হলেও, তার অপরাধের ন্যায্য বিচার হোক। সাবেক এই তিন নির্বাচন কমিশনার গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনকে তারা মাটিচাপা দিয়েছে। আমরা কাউকে লেলিয়ে দিয়ে বেআইনিভাবে রাস্তায় আঘাত করব না। এটা আমাদের নীতি নয়।’
বিএনপির মুখপাত্র রিজভী বলেন, ‘গত ১৬ বছর আমরা কখনো খেতে পেরেছি, কখনো পারিনি। অধিকাংশ রাত ঘুমাতে পারিনি। গুম-খুনের প্রতিবাদে রিমান্ডে ছিলাম, তার হিসাব নেই। সন্ত্রাসী ও মাদককারবারিদের সঙ্গে আমাদেরকে কারাগারে রেখেছে শেখ হাসিনার পুলিশ। রাজনীতিবিদদের জন্য ব্রিটিশ আমলে যেটুকু সম্মান ছিল, সেটুকুও দেননি শেখ হাসিনা। দেশকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে পরিবারের একচ্ছত্র শাসন কায়েম করেছেন। তার ছেলে-মেয়েরা রাজপুত্র-রাজকন্যার মতো এদেশ শাসন করেছে, জনগণের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, যাতে তাদের উত্তরসূরিরা আরামে থাকতে পারে। তাই ডুবাই হোক কিংবা কানাডা অথবা সিডনিতে, যত অট্টালিকা দেখা যাবে, সব আওয়ামী লীগের নেতাদের।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলতেন, তার কোনো সম্পত্তি নেই। অথচ দেখা গেল, পূর্বাচলে তার নামে, মেয়ের নামে, ছেলের নামে, ভাগ্নি ও ভাগ্নের নামে ১০ কাঠা করে প্লট। দুদকের তদন্তেই বের হয়েছে—কোথায় কোথায় শেখ হাসিনার সম্পদ রয়েছে। অথচ মিথ্যা বলেই মানুষকে ভয় দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ১৬ বছর ক্ষমতায় টিকে ছিলেন।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা কখনো অত্যাচারের বিরুদ্ধে কণ্ঠ নীরব রাখিনি। এ জন্যই বারবার আমাদের জেলে যেতে হয়েছে, মৃত্যুর মুখ থেকেও ফিরে এসেছি, দিনের পর দিন রিমান্ডে ছিলাম। তারপরও বলি—শেখ হাসিনা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, যুবলীগ-ছাত্রলীগ যে কাজ করেছে, আমরা সে কাজ করব না।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল আলম বাবুল প্রমুখ।
(ঢাকা টাইমস/২৬জুন/জেবি/এসএ)

মন্তব্য করুন