ফেসবুকে পোস্টে জুলকারনাইন সায়ের
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যেন একটা মাফিয়া সংগঠন!

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে ‘মাফিয়া সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে এক বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ করেছেন প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটিকে “প্রতিটি পরতে দুর্নীতিতে জর্জরিত” বলে উল্লেখ করেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডির এক পোস্টে তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে লুকিয়ে থাকা অপরাধ চক্র নিয়ে লম্বা পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা টাইমস পাঠকদের জন্য জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যেন একটা মাফিয়া সংগঠন। এই সংগঠনের প্রতিটি পরতে পরতে দুর্নীতি জড়িয়ে আছে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, ট্রেইনিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্লাইট অপারেশন, ইত্যাদি — প্রতিটি বিভাগেই আছে সংঘবদ্ধ একেকটা অপরাধ চক্র। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রতিটি সরকার। কারণ এদের চক্র কেবল দেশেই সীমাবদ্ধ নেই। আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের সাথেও রয়েছে এদের সখ্যতা।
একটি দেশের ফ্ল্যাগ ক্যারিয়ার যারা অপারেট করেন, সেই পাইলটদের অনেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে নারী সহকর্মীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ। এনোনিমাস হ্যাকার গ্রুপের কাছে বিদেশের হোটেল কক্ষে নারী সহকর্মীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন একজন পাইলট এমন সিসিটিভি রেকর্ডও রয়েছে। চলন্ত উড়োজাহাজে জোর পূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন পাইলট, এমন দাবিও তাঁরা করেছেন। এমন অসংখ্য অভিযোগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পরও বিমান কর্তৃপক্ষ নির্বিকার থেকেছে। লোক দেখানোর জন্যে ৩/৪ মাসের জন্যে কাউকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও, পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে গেলে গোপনে অভিযুক্তকে চাকরীতে পুনর্বহাল করা হয়ছে, এমন উদাহরণ রয়েছে। আর অভিযোগ করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাকরী হারাতে এবং সামাজিকভাবে হেয় করা হয় ভুক্তভোগীকে।
বিমানের পাইলটদের মাঝে রয়েছে দুটি ভাগ, একপক্ষ হলো — পাইলট বংশ, আরেক পক্ষ — সাবেক বিমান বাহিনী কর্মকর্তা চক্র।
এই পাইলট বংশরা বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের 'অচ্ছুত' বা নিচু জাতের বলে ট্রিট করেন। তাঁরা মনে করেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উপর রয়েছে তাঁদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অধিকার। এই চক্র নিজ পুত্র-কন্যা-শ্যালিকা-শ্যালক-দুলাভাই-কাজিন সহ সকলকে এনে ঢুকিয়েছে বিমানে। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে বিমানের এক পাইলট দুইবার তাঁর পাইলট স্ত্রীর জাল শিক্ষা সনদ দিয়েও একপ্রকারের পার পেয়ে গেছেন। এরাই মূলত বিমানের অপারেশনের ভাগ্য নির্ধারণ করে। বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারাও কম নন, তাঁরাও বিমানকে ঘিরে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্র, যেখানে একচ্ছত্র আধিপত্য তাঁদের।
কিন্তু সকল পক্ষই এক হয় যখন চোরাচালান সংঘটিত হয়। সাধারণত বড় চোরাচালানে সকল পক্ষ এক হয়, যেমন ধরুন লাশের কফিন বলে স্বর্ণ ঢুকিয়ে কেবল কফিন নিয়ে আসা, কফিনের ভেতরে লাশের বদলে থাকে স্বর্ণ — এমন বহুকিছু ঘটেছে বলেই দাবি করা হয়েছে।
বিমানের বিষয়ে সরকারের কোন সংস্থাই তদন্ত করে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি। কারণ বিমানের এই পান্ডারা দাবি করে 'দেশের ফ্ল্যাগ ক্যারিয়ারে বদনাম করে নাকি বিশেষ গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ ও ক্ষমতায় থাকা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে', এমনটাই চলছে যুগের পর যুগ ধরে।
কিন্তু সকল অপকর্মই একটা সময় উন্মোচিত হয়ে যায়, সম্ভবত তেমনটাই একসাথে ঘটতে চলেছে বিমানের এই ক্যান্সারাস চক্রের সাথে।
(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/এলএম)

মন্তব্য করুন