প্রধানমন্ত্রী সায় দিলে সমাপনী উঠে যাবে: প্রতিমন্ত্রী

ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্র

সমাপনী পরীক্ষা তুলে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তিনি জানান, এজন্য পঞ্চম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের ফাইল মন্ত্রণালয়ে চালাচালি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে এই পরীক্ষা তুলে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করা হবে।

রবিবার সকালে রাজধানীর ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে সুষ্ঠুভাবে সমাপনী-ইবতেদায়ি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। যদিও এই পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের মনে সাহস যোগায় এবং বৃত্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। তবুও শিক্ষানীতিমালা-২০১০ অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা হচ্ছে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের বিভ্রান্তি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, ‘এই পরীক্ষা সুন্দরভাবে শেষ করতে মনিটরিং সেলের সঙ্গে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোনোভাবে যেন প্রশ্নফাঁস না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি করছে। পরীক্ষার আগে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের গুজব ছড়ানো কয়েকটি লিংক শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

তবে সমাপনী-ইবতেদায়ি পরীক্ষা থাকছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষা থাকবে কি না সে সংক্রান্ত ফাইল মন্ত্রণালয়ে চালাচালি করা হচ্ছে। সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার পর এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা কমাতে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা তুলে দিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে। এর মাধ্যমে ছোট ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা কমে যাবে। তবে এই কার্যক্রম ২০২০ সাল থেকে চালু করার চিন্তাভাবনা থাকলেও এ বছর থেকে ১০০টি বিদ্যালয়ে তা পাইলট প্রকল্প হিসেবে করা হবে। এতে সফলতা এলে ২০২১ সাল থেকে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তা চালু করা হবে।’

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে আক্রান্ত জেলাগুলোর সব কেন্দ্রে এই পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ‘বুলবুলে আক্রান্ত বিভিন্ন জেলায় নানা ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলেও সেসব স্থানে কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ কারণে সেসব জেলায় নির্ধারিত সব বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।’

এবছর খাতা মূল্যায়ন বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণির খাতা মূল্যায়ন নিয়ে প্রতিবছর নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে এবছর এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

‘প্রতি বছর ৩০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এজন্য একটি আলাদা বোর্ড তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/টিএটি/জেবি)