বীরাঙ্গনা আফিয়া খাতুনের জীবনাবসান

কুমিল্লা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৫৬| আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৪:৪৯
অ- অ+

বিজয়ের মাসে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ১৯৭১ সালে পাকিস্তান বাহিনীর হাতে নির্যাতিত ও নিপীড়িত বীরাঙ্গনা আফিয়া খাতুন চৌধুরী খঞ্জনি। সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে কুমিল্লা নগরীর পূর্ব বাগিচাগাঁও বড় মসজিদ সংলগ্ন মেয়ের বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ছাড়েন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মৃত্যুকালে আফিয়া খাতুনের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি এক মেয়ে, জামাতা, নাতি-নাতনিসহ অনেক আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বীরাঙ্গনা আফিয়ার মেয়ে রোকসানা বেগম মায়ের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

১৯৩৯ সালে ফেনী জেলার বরইয়া চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন বীরাঙ্গনা আফিয়া। তার বাবা হাসমত আলী চৌধুরী ও মাতা মাছুদা খাতুন। ১৯৬৩ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ দিঘি ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের রুহুল আমিন মানিক ওরফে হেকমত আলীর সাথে তার বিয়ে হয়।

১৯৬৬ সালে স্বামী হেকমত আলী চট্টগ্রামের বৈদ্যুতিক শাখায় কর্মরত অবস্থায় মারা যায়।

স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধ গবেষকদের সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরাঙ্গনা আফিয়া স্বামীর বাড়ি সংলগ্ন জগন্নাথ দিঘির পাশে ছিল হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প। এই ক্যাম্পে সোনাপুরসহ আশপাশের গ্রামের বিবাহযোগ্য মেয়েদের ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। ওই সময় স্থানীয় রাজাকাররা দিয়ে আফিয়াকে হাবিলদার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা মুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত বীরাঙ্গনা আফিয়া ওই ক্যাম্পে আটক ছিলেন। আটক থাকা অবস্থায় হানাদার বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এলাকার গরিব মানুষকে খাবার দিয়ে সংযোগিতা করতেন।

কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আফিয়াকে গ্রামে জায়গা দেননি স্বজনরা। এক পর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। সেই থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আফিয়া মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।

২০১৫ সালে সংবাদ মাধ্যমে লেখালেখিতে সরকারের নজরে আসেন তিনি। একই সাথে স্থানীয় প্রশাসন এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদও তার সাহায্যে এগিয়ে আসে। ২০১৮ সালে সরকার তাকে বীর নারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

মঙ্গলবার সকালে নগরীর পূর্ব বাগিচাগাঁও জামে মসজিদে মরহুমার প্রথম জানাজা হয়। এরপর দাফনের জন্য লাশ চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে সেখানে দাফন করা হবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, বীরাঙ্গনা আফিয়া খাতুন চৌধুরী খঞ্জনিকে দাফনের পূর্বে গার্ড অফ অনার দেওয়া হবে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/২৪ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত ও কর্মস্থল ত্যাগ করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে এনবিআর
খিলক্ষেতে অপসারণকৃত পূজা মন্ডপটি ছিল অননুমোদিত: রেল মন্ত্রণালয়
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এলাকা থেকে ছাত্রলীগের জিহাদ পাঠান গ্রেপ্তার
চীন সফর শেষে দেশে ফিরেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা