বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের বৈষম্য আর অনিয়ম দূর করে দেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ সরকারের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন,
শুক্রবার বিকালে সাভারের ধামরাইয়ে যশোমাধব মন্দিরে রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যতোদূর জানা যায় আমাদের এই উপমহাদেশে প্রাচীনকাল থেকে রথযাত্রা অনুষ্ঠানের প্রচলন রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও এই রথযাত্রা পালিত হচ্ছে সুদীর্ঘকাল ধরে। এই অনুষ্ঠানটি আমাদের দেশে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ধামরাই-র রথযাত্রাটি যশোমাধবের রথযাত্রা হিসেবেই সবাই জানে। এর কারণ হিসেবে জানতে পেরেছি একই দেবতার বিভিন্ন নামের কারণে রথযাত্রা অনুষ্ঠানের এই একাধিক পরিচিতি। নাম যা-ই হোক, আমাদের দেশে এই অনুষ্ঠানটি পঞ্জিকা অনুসরণ করে আষাঢ় মাসের একটি নির্দিষ্ট তিথিতে সর্বত্র অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমান কাল ধরে এ দেশে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, শ্রেনি, পেশার মানুষ পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি রেখে একসঙ্গে বসবাস করে আসছে। রথযাত্রা হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ-পেশা-ধনী-গরীব নির্বিশেষে অনেক দর্শনার্থী আসেন এবং অনুষ্ঠানে শরিক হন বলে জানতে পেরেছি। এটি এ ভূখন্ডের মানুষের অসাম্প্রদায়িক মানসিকতা ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। রথের মেলায় এসে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা আনন্দ ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এই জাতীয় অনুষ্ঠানের মূল শিক্ষা সাম্যের বাণী প্রচার করা।
এসময় উপদেষ্টা আরও বলেন, ধামরাই’র এই রথযাত্রা অনুষ্ঠানটি বাংলা ১০৭৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় চারশ' বছরের এই অনুষ্ঠান নিঃসন্দেহে আমাদের ঐতিহ্যের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। আমি জেনে আনন্দিত হয়েছি যে, ধামরাই-র রথযাত্রা অনুষ্ঠানটি দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ রথযাত্রা উৎসব। এটি আপনাদের জন্য অবশ্যই গৌরবের বিষয়।
কারুপণ্যের এই বিখ্যাত পৌর শহর ধামরাইয়ে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মাসব্যাপী যে শিল্পমেলার আয়োজন চলে তা এই অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে বলে আমার বিশ্বাস। রথ উৎসবকে কেন্দ্র করে আজ হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি দেখে আমি খুবই আনন্দিত। এই সমাবেশ থেকে সহজেই অনুমান করতে পারি যে, কী বিপুল আনন্দ-উদ্দীপনা মানুষের মধ্যে জাগ্রত হয়েছে।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং সকল ধর্মাবলম্বীদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের আহ্বান জানান।
(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/এলএম)

মন্তব্য করুন