ত্রাণ না পেয়ে লকডাউনে ভিক্ষায় বেরিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন

আশফাক জুনেদ, বড়লেখা (মৌলভীবাজার)
  প্রকাশিত : ০৬ মে ২০২০, ১৯:২১
অ- অ+

ঘরে খাবার নেই। তাই বাধ্য হয়ে লকডাউনের মধ্যেও ভিক্ষার থলে হাতে বেরিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন। উদ্দেশ্য আশপাশের কয়েক গ্রাম ঘুরে যা পাবেন তা দিয়ে বাড়ি গিয়ে হাড়ি বসাবেন। সেই ভোর বেলা বেরিয়েছেন। তীব্র রোদ্রের তাপ সহ্য করে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চাইছেন কিছু সাহায্য। এক সময় জেলে ছিলেন। মাছ শিকার করতেন। মাছ বিক্রি করে ভালোই চলতো তার সংসার। এখন বয়স হয়ে যাওয়ায় আর কাজ করতে পারেন না। ভিক্ষা করে দিন চলে তার।

মঙ্গলবার দুপুরে উত্তপ্ত রোদে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বোয়ালী গ্রামে একটি থলে হাতে ভিক্ষা করতে দেখা যায় তাকে।

এ সময় কথা হয় গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন ঘরে খাবার নেই তাই বাধ্য হয়েছি ঘর থেকে বের হতে। এ গ্রাম ও গ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছি। মানুষজন যা কিছু সাহায্য করে তাই দিয়ে বাড়িতে গিয়ে হাড়ি বসাবো। এখন মানুষের বাড়ি গেলেও মানুষ তাড়িয়ে দেয়। বাইরের মানুষ বাড়িতে ঢুকতে দেয় না। অনেকে তেড়ে আসে।

সরকারি কোনো ত্রাণ পাননি এমন প্রশ্নে গিয়াস উদ্দিন তাচ্ছিল্যের হাসি হাসেন। বলেন যারা ত্রাণ বিতরণ করছে তাদের পেটই ভরছে না, আর আমাদের দিবে কী? শুনলাম সরকার গরিবদের চাল ডাল দিচ্ছে। কই আমি তো কিছু পেলাম না।

ত্রাণের জন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানও আমার করুণ অবস্থার কথা জানেন। আর মেম্বার তো আমার পাশের বাড়ির। আমার সবকিছুই সে জানে। তারপরও এক মুষ্টি চাল-ডাল সে আমাকে দেয় নাই।

তিনি বলেন, স্ত্রী আর এক মেয়ে নিয়ে আমার অভাবের সংসার। এক সময় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুকুরে মাছ শিকার করে দিতাম। নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরতাম। মাছ বিক্রি করে যা আয় হতো তাই দিয়ে ভালোই চলতো সংসার। কিন্তু এখন বয়স হয়েছে। মাছ ধরতে পারি না। কোনো কাজ কর্মও করতে পারি না। ভিক্ষাই এক মাত্র উপায়। একসময় এসব এলাকায় মাছ বিক্রি করতাম। মানুষের পুকুরে মাছ ধরে দিতাম। আর এখন ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। এসব এলাকায় ভিক্ষা করতে হচ্ছে। এই বলে চোখ মুছেন গিয়াস উদ্দিন।

শুধু গিয়াস উদ্দিন নন, এরকম অনেকেই আছেন। করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে তাদের জীবন ধারণ। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী দিলেও তা অনেকেই পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে ১০ নম্বর মুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, আমাদের ইউনিয়ন অনেক বড়। তাছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে এই ইউনিয়নে গরিব মানুষের সংখ্যা বেশি। ইউনিয়নে যে পরিমান সরকারি ত্রাণ আসে তার চাইতে বেশি চাহিদা থাকায় সবাইকে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয় না। আমি গিয়াস উদ্দিনের বিষয়ে তার এলাকার মেম্বারকে বলে দেবো।

(ঢাকাটাইমস/৬মে/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আজ ৭ দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা
মুক্তি পেল পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘৩৬ আওয়ার্স অব বিট্রেয়াল’
আদাবরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ১০২ জন আটক
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা, কমতে পারে তাপমাত্রা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা